/
/
/
লাঠিটিলা সাফারি পার্ক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া ছাড়া কিছুই নয়!
লাঠিটিলা সাফারি পার্ক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া ছাড়া কিছুই নয়!
Relaks News 24
আপলোড সময় : 1 ঘন্টা আগে
লাঠিটিলা সাফারি পার্ক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া ছাড়া কিছুই নয়!
Print Friendly, PDF & Email

প্রকৃতি যেন সবুজ-শ্যামল বনভূমির দ্বারা নিজ হাতে সিলেটকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছে। মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার সংরক্ষিত লাঠিটিলা বন এলাকায় ১ হাজার ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক নির্মাণ করার একটি উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। তবে সংরক্ষিত বনে সাফারি পার্ক নির্মাণ করা হোক চান না স্থানীয়রা। পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য ধ্বংস করে এই পার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্তে লাঠিটিলা এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দাদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।তাঁদের দাবি- ৫০ থেকে ৬০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় তাঁরা এখানে বসবাস করে আসছে। তাঁরা এখানে সেগুন, করই, মেহগণি, ফলমুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়েছেন। এসব বৃক্ষের মধ্যে ৫০ বছর বয়সীও বৃক্ষ রয়েছে। সাফারি পার্ক নির্মাণ হলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টসহ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হবে তাঁরা। এছাড়া তাঁরা মনে করছেন, পার্ক হলে এলাকার পরিবেশ ও নষ্ট হবে। অন্যদিকে পরিবেশবাদী সংগঠনরা এখানে অর্থের অপচয় করে সাফারি পার্ক নির্মাণ করা থেকে সরকারকে বিরত থাকার দাবি জানিয়েছেন।

সংরক্ষিত লাঠিটিলা বন এলাকায় পার্ক নির্মাণের লক্ষ্যে, ৫ হাজার ৬৩১ একর জায়গা জুড়ে এই পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। তবে আইন না মানা, বাড়তি ব্যয়সহ নানা অসংগতি উল্লেখ করে (৩ সেপ্টেম্বর) প্রকল্পটি অনুমােদন না করে ফেরত পাঠিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।প্রস্তাবিত এই সাফারি পার্কে হেলি প্যাড নির্মাণ, স্কাই ওয়াক, ৩০ কোটি টাকায় সিংহ, বাঘ, হাতি নীলগাই, প্যারা হরিণ, আফ্রিকান জিরাফসহ বন্যপ্রাণী কেনা, সামুদ্রিক এ্যাকুরিয়ামের জন্য মাছ, কচ্ছপ, অজগর ইত্যাদি প্রাণীও কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে।কিন্তু সংরক্ষিত এই বনে সাফারি পার্ক নির্মাণ হোক তা চায়না ৫০ থেকে ৬০ বছর ধরে এলাকায় বসবাস করা গ্রামবাসী। তাঁরা বনভূমি উজাড় করে সাফারি পার্ক নির্মাণের পক্ষে নয়। তাঁদের দাবি জীববৈচিত্র্য ধ্বংসসহ, এলাকার পরিবেশ নষ্ট হবে। এছাড়া পাহাড় ও বনের খাঁজে খাঁজে বসবাসরত ২ হাজারেরও বেশি পরিবারের লক্ষাধিক মানুষ যাবে কোথায় এটাও তাঁরা প্রশ্ন রেখেছে।লাঠিটিলা গ্রামের ব্যবসায়ী ফজল মিয়া জানান, ৫০/৬০ বছর ধরে এখানে বসবাস করে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। সাফারি পার্ক নির্মাণ করার নামে এগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হবে এটা আমরা মানবোনা।দিলকুশ বাজারের চা ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন জানান, এই জেলার অন্যান্য স্থানেও পার্ক রয়েছে। সেগুলোর পরিবেশ খুব খারাপ। আমরা চাইনা আমাদের এখানে পার্ক হয়ে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হোক।

লাঠিটিলা গ্রামের তরুণরা বলছেন, আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত বনায়ন ধ্বংস হচ্ছে। আমাদের বনাঞ্চলগুলো প্রাকৃতিক সম্পদের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রতিটি বন তার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে বন্যপ্রাণী ও অন্যান্য সম্পদের আধার হিসেবে কাজ করছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি বন ও বনজ সম্পদের উপর নির্ভর করেই বেঁচে আছে এদেশের লাখো কোটি মানুষ। তবে বন ও পরিবেশ এখন হুমকির মুখে।এদিকে সাফারি পার্ক নির্মাণের পক্ষেও মত দিয়েছেন কিছু নেতাশ্রেণির লোকজন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন জানান, কাজের সঠিক মান নিয়ন্ত্রণ করে যদি সাফারি পার্ক নির্মাণ হয় আপত্তি নাই। তবে আমি চাইবো পার্ক নির্মাণ করা হলে এলাকার যুবক ভাইদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।লাঠিটিলা এলাকার গ্রাম্য প্রধান আব্দুর রাজ্জাক জানান, এখানে বসবাসরত হাজার হাজার গ্রামবাসীকে পূনর্বাসন করে যেনো পার্কটি নির্মাণ করা হয়। এতে আমাদের আপত্তি থাকবেনা।

এদিকে পরিবেশবাদী সংগঠন বাপা, পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই এলাকায় সাফারি পার্ক নির্মাণ করা অর্থের অপচয় ছাড়া কিছু নয়। এই বন ও পাহাড় টিলায় পার্শ্ববর্তী দেশের বিভিন্ন প্রকার জীবজন্তু, পশু পাখি বসবাস করে আসছে। পার্কটি নির্মাণ হলে জীববৈচিত্র্য হুমকীর মুখে ঠেলে দেয়াসহ বন্যপ্রাণীর বড় ক্ষতি হবে। তাই সরকারকে এই উদ্যোগ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তাঁরা।

নিউজটি করেছেন : তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
{{ reviewsTotal }}{{ options.labels.singularReviewCountLabel }}
{{ reviewsTotal }}{{ options.labels.pluralReviewCountLabel }}
{{ options.labels.newReviewButton }}
{{ userData.canReview.message }}

এ জাতীয় আরো খবর

Untitled design (9)
Untitled design (8)
Untitled design (10)
Untitled design (7)
Untitled design (5)
Untitled design (6)
Untitled design (1)
Untitled design (2)
Untitled design (3)
Untitled design (4)
Untitled design (9)
Untitled design (8)
Untitled design (10)
Untitled design (7)
Untitled design (5)
Untitled design (6)

Log in

Not registered? Join us FREE