ওষুধ শিল্পে চলমান শ্রমিক অসন্তোষের কারণে দেশের অন্তত ২০টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকদের দাবির মুখে কারখানাগুলোতে অস্থিরতা বাড়ছে, যা দেশের ওষুধ বাজারে সংকট তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শ্রমিক অসন্তোষের ফলে দেশের বড় বড় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তারা দাবি করেছেন যে, শ্রমিকরা অযৌক্তিক দাবি তুলে আন্দোলন করছে এবং কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রেখেছে। ফলে ওষুধের সংকটের আশঙ্কা বাড়ছে।
গত রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) অন্তত ২০টি ওষুধ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ ছিল, যার মধ্যে হেলথকেয়ার ও রেনেটাসের মতো বড় প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। শ্রমিকরা বিভিন্ন অযৌক্তিক দাবির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির মহাসচিব ও হাডসন ফার্মাসিউটিক্যালসের এমডি এস এম শফিউজ্জামান বলেন, “কয়েক সপ্তাহ ধরে এই আন্দোলন চলছে এবং তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এভাবে চলতে থাকলে ওষুধ শিল্প ধ্বংসের মুখে পড়বে।” শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে বেতন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সুবিধা, যা মালিকপক্ষের জন্য অর্থনৈতিকভাবে চাপ তৈরি করছে বলে অভিযোগ করেছে ফার্মাসিউটিক্যাল কর্তৃপক্ষ।
ওষুধ শিল্পে কর্মরতদের বেতন কাঠামো ভিন্ন হওয়ায় অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কিছু কারখানায় শ্রমিকরা দাবি আদায়ের পরও আবার নতুন দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে। কারখানাগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন দাবি তুলে ধরে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের সহযোগিতা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান আবদুল মুক্তাদির বলেছেন, “পূর্বে কোনো সময় ওষুধ শিল্পে এমন শ্রমিক অসন্তোষ দেখা যায়নি। এ পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান না হলে দেশের ওষুধ খাতে সংকট দেখা দিতে পারে।”
বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প আন্তর্জাতিক মান অর্জন করেছে এবং স্থানীয় চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশই পূরণ করে থাকে। তবে চলমান শ্রমিক অসন্তোষ, আন্দোলন ও ভাঙচুরের কারণে এই খাত এখন বড় ধরনের সংকটে পড়তে পারে। কর্তৃপক্ষ ও সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে যেন দেশের ওষুধের বাজারে কোনো সংকট সৃষ্টি না হয় এবং ওষুধ শিল্প তার স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে পারে।
ডেস্ক রিপোর্ট: রিলাক্স নিউজ ২৪