উপকূলীয় অঞ্চল পিরোজপুরের মঠবাড়িয়াতে থেমে থেমে হচ্ছে ভারী বৃষ্টি, সেইসঙ্গে বইছে ঝড়ো হাওয়া। উত্তাল বঙ্গোপসাগর,এ অবস্থায় চার সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে উপজেলা জুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলা সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টা থেকে টানা ভারী বর্ষণে উপজেলা জুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। উপজেলার পৌরশহরের থানাপাড়া এলাকা, মহিলা কলেজপাড়া এলাকা, সুইচ গেট এলাকা ,কাপড়িয়া পট্টিসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ভারী বর্ষণে বেশিরভাগ শাখা সড়ক, দোকানপাট ও তুলনামূলক নিচু বাড়িঘরে পানি উঠে গেছে। এবং ইউনিয়ন গুলোর বেশ কিছু নিচু এলাকা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।মানুষের চলাফেরা ও যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া মানুষ বের হচ্ছে না বাড়ির বাইরে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো। কোনো কাজ করতে না পারায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
পৌর শহরের বাসিন্দা ব্যাটারিচালিত অটো রিক্সা চালক সিদ্দিক মিয়া জানান,সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে ভিজে গাড়ি চালাতে পারি না। পরিবারে ছয়জন মানুষের খাবার যোগাড় করতে হয়। যে অবস্থা কীভাবে পরিবারের খাবার জোগাড় করব আর দুইটা কিস্তি আছে কীভাবে ওই কিস্তি দেব জানি না। দুপুর হলেও অনেকেই ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। টানা বৃষ্টিতে জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। সড়কও অনেকটা ফাঁকা। অটোরিকশা-অটোবাইকের সংখ্যাও খুবই কম।
পৌর শহরের বাসিন্দা আবিদ হাসান জানান, গত এক সপ্তাহের অধিক মঠবাড়িয়া উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শহরে প্রতিদিন কমপক্ষে ছয়-সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। আরও করুন অবস্থা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে আট – নয় ঘণ্টা। তাছাড়া গত তিনদিন যাবত বিদ্যুৎ নেই। ফল বিক্রেতা স্বপন মন্ডল জানান, বৃষ্টিতে মানুষ ঘর থেকে বের হয় না। তাই বেচাকেনাও কম হয়। আজ সারাদিন বৃষ্টি হওয়ায় তেমন কোন আয়ই করতে পারি নাই।
উপজেলার ১১ ইউনিয়নের অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় মানুষজনকে কষ্ট করে চলাচল করতে হচ্ছে। অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে নদী ও খালের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।এতে রোপা আমনসহ বিভিন্ন সবজি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। কৃষিশ্রমিকদের দিনভর বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করতে দেখা গেছে। দুপুরের দিকে সদর উপজেলার মল্লিক বাড়ি এলাকায় বেশ কয়েকজন কৃষিশ্রমিককে কাজ করতে দেখা যায়। বৃষ্টি থেকে শরীর রক্ষা করতে মাথায় প্লাস্টিকের আবরণ ব্যবহার করলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না তাঁদের।
ডেস্ক রিপোর্ট, বরিশাল