আওয়ামী লীগের শাসনামলে বাংলাদেশ বিদেশি ঋণের পরিমাণ দ্রুত বেড়ে ১০৩ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঋণ বৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা বিদেশি ঋণের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে চলতি বছরের জুন মাস শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ১০৩.৭৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকার সমান। এর মধ্যে ৮৩.২১ বিলিয়ন ডলার সরকারের নেয়া ঋণ এবং বাকিটা বেসরকারি খাতের দায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, সরকার ও বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণের পরিমাণ গত তিন মাসে দ্রুত বেড়েছে। মার্চ মাসে এই ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৯.৩০ বিলিয়ন ডলার, যা মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে প্রায় ৪.৪৮ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, বৈদেশিক মুদ্রায় উচ্চ সুদের হারে এবং কঠিন শর্তে ঋণ নেওয়ার ফলে সরকারের দায় বাড়ছে। এই ঋণের একটি বিশাল অংশ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, যার মধ্যে পদ্মা সেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, এবং কর্ণফুলী টানেল উল্লেখযোগ্য।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার সময় বিদেশি ঋণ ছিল ৫০.৩৬ বিলিয়ন ডলার, যা গত ১৫ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। করোনা মহামারির পর বৈশ্বিক আর্থিক সংকট এবং মার্কিন সুদের হার বৃদ্ধির ফলে ঋণের শর্ত আরও কঠিন হয়েছে। দেশীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নও ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকে চাপে ফেলেছে, তবে তা সত্ত্বেও বিদেশি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে।
আওয়ামী সরকারের গত ১৫ বছরের শাসনামলে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশকে বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। ঋণের এই ক্রমবর্ধমান প্রবাহ দেশের অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে, বিশেষ করে উচ্চ সুদ ও কঠিন শর্তাবলী ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে চাপ বাড়াচ্ছে। বিশ্লেষকরা ভবিষ্যতে এই ঋণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছেন।
রিলাক্স নিউজ ২৪