ঢাকা ও ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
গতকাল, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে একটি বিরল দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন। দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন এবং বাণিজ্যিক সুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন কোনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এই বৈঠকে অংশ নেন। ড. ইউনূস বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের শুল্ক ১৮ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দেন, যা ভিয়েতনামের মতো প্রতিযোগীদের তুলনায় বাংলাদেশের শুল্ক হার কমাতে সাহায্য করবে।
ড. ইউনূস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের পরিকল্পনা তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার সরকারকে সব ধরনের সমর্থন দেওয়ার আশ্বাস দেন।
বৈঠকের আলোচনায় বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের জিএসপি সুবিধা পুনরায় চালু করা এবং পোশাক শিল্পে শুল্ক কমানোর গুরুত্ব দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে এই সুবিধা ফিরে পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল, কিন্তু পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে মার্কিনবিরোধী পররাষ্ট্রনীতির কারণে তা সফল হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ড. ইউনূসের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বৈঠকের পাশাপাশি ড. ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন, যেখানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা ও বিশ্ব শান্তি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরবেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে শুরু করেছে। বাইডেন-ইউনূস বৈঠক দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতির দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এই বৈঠক থেকে প্রাপ্ত ফলাফল বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করবে।
অনলাইন ডেস্ক