বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা বিপণনে ব্যয় করে। তবুও গুণগত মান ও কার্যকারিতা নিয়ে কোনো বিজ্ঞাপন প্রচার করে না, ফলে রোগীরা সচেতনতার অভাবে প্রতারিত হচ্ছেন। ওষুধ কোম্পানিগুলো ডাক্তারদের উপঢৌকন দিয়ে বাজার প্রভাবিত করছে। এ অবস্থায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ওষুধের মান ও কার্যকারিতা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো বিপণনে বছরে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় করছে, যা মূলত ডাক্তারদের উপঢৌকন প্রদানে ব্যবহৃত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের মতে, সিনিয়র ডাক্তারদের প্রভাবিত করার মাধ্যমে এই টাকা ব্যবহার করা হয়। ফলে রোগীরা ওষুধের গুণগত মান ও কার্যকারিতা সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে যায়।
বিআইডিএস-এর গবেষণায় দেখা গেছে, বিপণনে কোম্পানির আয়ের ২৯ শতাংশ ব্যয় হয়। ৫৮ শতাংশ কর্মীই মার্কেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত। তবে, ১৯৮২ সালের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুযায়ী গণমাধ্যমে ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধ।
অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ মনে করেন, চিকিৎসকদের অনৈতিক প্রভাব নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি। ওষুধের গুণগত মান সম্পর্কে সচেতনতা না থাকায় রোগীরা অপ্রয়োজনীয় ওষুধ কিনছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল যথাযথভাবে হয় না, যা বিপজ্জনক ওষুধের যথাযথ মূল্যায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। অন্যদিকে, ঔষধ প্রশাসনের বিশেষজ্ঞের অভাব জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি।
বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের অস্বচ্ছ বিপণন প্রক্রিয়া বন্ধ করতে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। ওষুধের গুণগত মান ও কার্যকারিতা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচারণা চালানো প্রয়োজন। মানুষ যেন সঠিক তথ্য জেনে বুঝে ওষুধ সেবন করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
অনলাইন ডেস্ক