বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পাঁচজনের দেহে রিওভাইরাস শনাক্ত করেছে আইইডিসিআর। নিপাভাইরাসের মতো উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা করা রোগীদের শরীরে এ ভাইরাস পাওয়া যায়। শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এই ভাইরাসটি বাদুড় থেকে ছড়াতে পারে। সতর্কতার জন্য খেজুরের কাঁচা রস পান না করা এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সরকারি সংস্থা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে পাঁচজনের দেহে রিওভাইরাস শনাক্ত করেছে। আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, “নিপাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় রোগীদের পরীক্ষা করা হয়। নিপা নেগেটিভ আসার পর রিওভাইরাস পাওয়া যায়। এটি আগে বাংলাদেশে কখনো শনাক্ত হয়নি।”
রিওভাইরাস সাধারণত হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট, জ্বর, মাথাব্যথা, বমি এবং ডায়রিয়া হতে পারে। সংক্রমণ গুরুতর হলে নিউমোনিয়া এবং মস্তিষ্কের প্রদাহও দেখা দিতে পারে। শিশু ও বৃদ্ধরা বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। বিশ্বজুড়ে রিওভাইরাসের নয়টি ধরন পাওয়া গেছে, যার মধ্যে চারটি মানবদেহে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। বাংলাদেশে শনাক্ত ধরনটি ব্যাট-রিওভাইরাস, যা বাদুড় থেকে ছড়ায়।
আইইডিসিআরের গবেষণায় জানা গেছে, শীতের সময় বাদুড়ের মাধ্যমে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে বাদুড় খেজুরের কাঁচা রসে ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়। সেই রস পান করলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ড. তাহমিনা জানান, “বাংলাদেশে অনেক রোগীর মস্তিষ্কের প্রদাহ দেখা দেয়, যার কারণ অজানা। রিওভাইরাস শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।” নিপাভাইরাসের মতো রিওভাইরাসও শিশুদের জন্য গুরুতর ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এই রোগ প্রতিরোধে টিকা দেওয়া হয়, যা সাধারণত শিশুদের মধ্যে কার্যকর।
রোগ থেকে বাঁচতে খেজুরের কাঁচা রস এড়িয়ে চলা, বাদুড় খাওয়া ফল না খাওয়া, এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার এবং খাবার ঢেকে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
অনলাইন ডেস্ক