আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে গণহত্যা, গুম, ও যৌন নির্যাতনকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে যুক্ত করে নতুন ৮টি সংশোধন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার বিধানসহ বেশ কিছু নতুন ধারা ও উপধারা খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় নতুন সংযোজন হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে আরও সময়োপযোগী করতে সহায়ক হবে। সংশোধনীতে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।
সোমবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আইন ও বিচার বিভাগ আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ সংশোধন করার প্রস্তাব তুলে ধরে। এই সংশোধনীতে পাঁচটি নতুন ধারা-উপধারা সংযোজন এবং তিনটি বিদ্যমান ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
গণহত্যা, গুম এবং যৌন নির্যাতনকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করার পাশাপাশি প্রস্তাবিত খসড়ায় রাজনৈতিক দলকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার বিধানও সংযোজন করা হয়েছে। তবে, সভায় অনেক বিশিষ্টজন এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন এবং বিকল্প হিসেবে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিলের পরামর্শ দিয়েছেন।
মতবিনিময় সভায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এই আইন সংশোধনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। তিনি আরও জানান, গণহত্যার ঘটনায় সবার কাছে গ্রহণযোগ্য বিচার প্রক্রিয়া তৈরি করতে আইনের সংশোধন প্রয়োজন।
বিভিন্ন বিশিষ্টজন যেমন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, এবং রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এই আইনের সংশোধনী নিয়ে তাঁদের মতামত দিয়েছেন। তারা ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং ডিজিটাল প্রমাণ গ্রহণের প্রক্রিয়াকে আরও উন্নত করার প্রস্তাব করেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে প্রস্তাবিত সংশোধনী বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। তবে, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিধান নিয়ে মতভেদ তৈরি হয়েছে। সংশোধনীর চূড়ান্ত রূপ দেশের জনগণের এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তৈরি করা হবে বলে প্রত্যাশা।
রিলাক্স নিউজ ২৪