সিলেটে শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনজন নারীকে আটক করেছে পুলিশ। প্রতিবেশী এই তিন নারীর মধ্যে আছেন শামিমা বেগম মার্জিয়া, তার মা আলিফজান বেগম এবং নানী কুতুবজান বেগম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কানাইঘাট থানা পুলিশ।
শিশু মুনতাহার লাশ নিজ বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলার সময় দেখে ফেলেন স্থানীয় লোকজন, যা পুলিশের সন্দেহের ভিত্তিতে তদন্তের গতি বাড়িয়ে দেয়। মুনতাহার নিখোঁজের পর থেকেই দেশ-বিদেশে বিভিন্ন মহল তার সন্ধান পেতে সামাজিক মাধ্যমে সরব ছিলেন এবং পরিবারের পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছিল।
রোববার (১০ নভেম্বর) ভোররাতে সিলেটের কানাইঘাটে মুনতাহার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় লোকজন ভোর ৩টার দিকে মুনতাহার প্রতিবেশী এক নারীকে লাশ খাল থেকে উঠিয়ে পুকুরে ফেলার চেষ্টা করতে দেখে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তিন নারীকে আটক করা হয়। মুনতাহার গলায় রশি বাঁধা অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়, যা পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের ইঙ্গিত দেয়।
কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আওয়াল বলেন, “পুলিশের পক্ষ থেকে আগে থেকেই এলাকার মানুষকে পাহারা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ফলে এলাকার লোকজন সতর্ক অবস্থায় ছিল এবং ঘটনা ঘটতে দেখে পুলিশকে জানায়।”
গত ৩ নভেম্বর, মুনতাহা আক্তার জেরিন তার বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে ফিরে আসে এবং বিকেলের দিকে বাড়ির পাশে অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলা করতে যায়। সন্ধ্যা হলেও বাড়ি না ফেরায় পরিবার খোঁজ শুরু করে এবং তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে কানাইঘাট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
মুনতাহার সন্ধান চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ স্ট্যাটাস দেন। পরিবারের পক্ষ থেকে যে কোনো সন্ধানদাতাকে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
শিশু মুনতাহার নির্মম হত্যাকাণ্ডে স্থানীয় এলাকাবাসী শোকাহত। পুলিশ ঘটনাটিকে পরিকল্পিত বলে ধারণা করছে এবং আটক তিন নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ ও তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার হবে বলে প্রত্যাশা করছেন এলাকাবাসী।
ডেস্ক রিপোর্ট: রিলাক্স নিউজ ২৪