সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান ছাত্র আন্দোলনের উত্তেজনা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা এবং এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণের ঘটনায় ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
গতকাল ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের সংঘর্ষ ঘটে। পাঁচ জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে। ঢাকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, সায়েন্সল্যাব, মহাখালী এবং মিরপুরে সংঘর্ষ হয়। পুলিশের সাথে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ৬ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ঢাকায় ২ জন, চট্টগ্রামে ৩ জন এবং রংপুরে ১ জন রয়েছে।
সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের বক্সে আগুন, আওয়ামী লীগ অফিসে অগ্নিসংযোগ, এবং আবাসিক হলে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পরপরই সাতটি বোমা বিস্ফোরিত হয়।
আন্দোলনকারীরা ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে সড়ক অবরোধ করে রাখেন, ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং বেশ কিছু ফ্লাইট বাতিল করতে হয়। ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে বহু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন এবং তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আজ ঢাকার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহতদের স্মরণে গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিলের আয়োজন করা হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের কড়া অবস্থানের পাশাপাশি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হস্তক্ষেপের কারণে আন্দোলনের উত্তেজনা বাড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।