সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বুড়দেও গ্রামের দুই ভাই শওকত আলী ও আমির আলী কৃষি পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তাদের ১২ সদস্যের সংসার চলত কৃষির আয় দিয়ে। চলতি বছর তিন দফা বন্যায় তাদের বসতঘর ভেসে গেছে এবং কৃষিকাজ বন্ধ হয়ে গেছে। শওকত ও আমির এখন পরিবার নিয়ে গ্রামে আশ্রিত।
পাড়ুয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম বেড়াই ও নোয়াগাঁওয়ের আবদুল ওয়াহিদ এক সময় পাথরের ব্যবসা করতেন। ভোলাগঞ্জ কোয়ারি বন্ধ হওয়ার পর তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। ২০২২ সালের বন্যা এবং চলতি বছরের তিন দফা বন্যায় তাদের জীবন তছনছ হয়ে গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলার বেশিরভাগ নিম্নআয়ের মানুষের জীবন-জীবিকা পাথরকেন্দ্রিক ছিল। কোয়ারি বন্ধ হওয়ার পর তারা বিকল্প পেশা হিসেবে মৎস্য, কৃষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসাকে বেছে নেন। ২০২২ সালের বন্যায় তাদের প্রথম ধাক্কা আসে এবং চলতি বছরের তিন দফা বন্যায় তাদের সর্বনাশ ঘটে।
কৃষি ও মৎস্য নিয়ে যারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন, বন্যায় তাদের ফসল নষ্ট হয়েছে এবং পুকুর ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। পর্যটনকেন্দ্রভিত্তিক পেশায় নিয়োজিতরা পর্যটকদের অনুপস্থিতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সিলেট হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সভাপতি এ টি এম শোয়েব জানান, তিন দফা বন্যার কারণে সিলেটের পর্যটন ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। জেলা প্রশাসন এখনো ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করতে পারেনি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবদুল কুদ্দুস বুলবুল জানান, একবার বন্যার পানি নামার আগেই আবার বন্যা দেখা দেয়, যার কারণে ক্ষতির সঠিক হিসাব করা সম্ভব হয়নি। তবে কৃষি, মৎস্য, যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত মিলিয়ে হাজার কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে বলে সরকারি বিভিন্ন দফতর থেকে জানা গেছে।
ডেস্ক রিপোর্ট: রিলাক্স নিউজ ২৪