রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার মামলায় দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বরখাস্তকৃত এএসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পিবিআই এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রংপুর মহানগর পুলিশের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত কমিশনার মো. মজিদ আলী নিশ্চিত করেছেন যে আজ সোমবার সন্ধ্যার পর এ দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী রংপুরের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজু আহমেদের আদালতে এই হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয় যে আবু সাঈদ একটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন এবং তাকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।
১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন। তিনি কোনো হুমকি না দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশের শটগানের গুলিতে মারা যান। হত্যার সময় আবু সাঈদ নিরস্ত্র ছিলেন এবং ভিডিও ফুটেজে এটি নিশ্চিত হওয়া যায়। ঘটনার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন আরও বেগবান হয় এবং দেশজুড়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। মামলায় অন্যান্য উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার অন্যান্য আসামির মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আবদুল বাতেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের অনেক নেতা-কর্মীও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মামলাটির প্রেক্ষাপটে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অবসানে পাঠানোর ঘটনাও ঘটেছে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি ও পুলিশ কমিশনারদের অবসর।
আবু সাঈদের হত্যা মামলায় দুই পুলিশ সদস্যের গ্রেপ্তার বিচার প্রক্রিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। মামলাটি বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পুলিশি সহিংসতার বিষয়ে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে।
ডেস্ক রিপোর্ট: রিলাক্স নিউজ ২৪