মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের শিলুয়া থেকে পশ্চিম শিলুয়া হয়ে ভরাডহর এলাকায় দুটি সড়ক দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। সড়ক দুটি ব্যবহারে চারটি গ্রামের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে। ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে শিলুয়া এলাকা বন্যায় প্লাবিত হলে এই এলাকার সড়ক দুটি পানিতে তলিয়ে যায়। বন্যার পর ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কের বেহাল দশা হয়। সড়ক দিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা অনুপযোগী হয়ে পড়ে। কোন উপায় না দেখে এলাকার যুবকরা স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক সংস্কারে নেমে পড়ে। সড়ক সংস্কারে তাদের আর্থিক সহযোগীতা করেন চার এলাকার মানুষ।
গত শুক্রবার সকাল থেকে এলাকার যুবকরা একত্রে মিলে কাজ শুরু করেন। কেউ বাড়ি থেকে কোদাল, ঝুঁড়ি,খুন্তি নিয়ে আসেন। সড়কে ভাঙা অংশে গাড়ি দিয়ে কিছুদূর থেকে মাঠি নিয়ে এসে সেখানে ফেলেন। কিছু জায়গায় খানাখন্দে ভরপুর সে জায়গায় মাঠি ফেলে সড়কটি চলাচলের জন্য উপযুক্ত করেন। এভাবে দুই দিনের স্বেচ্ছাশ্রমে শনিবার তাদের কাজ শেষ করেন।
সংস্কার করা প্রথম সড়কটি ভরাডহর হয়ে মাগুরা বটেরতল গিয়ে মিলিত হয়েছে। সড়কটি বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় আগস্টের বন্যায়। সড়কটির এক তৃতীয়াংশ পানির নিচে ছিল। আর দ্বিতীয় সড়কটি ভরাডহর হয়ে শিলুয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে মাগুরা বটেরতলে মিলিত হয়েছে। নদী তীরবর্তী কাঁচা রাস্তাটি একটু বৃষ্টি হলে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যেত। রাস্তা সংস্কারে কেউ টাকা, কেউ পাথর, কেউ ইট, কেউ মাঠি দিয়েছেন।
সারোয়ার হোসেন নামের এক যুবক জানান, উপজেলর পশ্চিম শিলুয়া এলাকার দুটি সড়ক দীর্ঘদিন যাবৎ জরাজীর্ণ। আগস্টের বন্যায় গ্রামীণ সড়ক দুটির বেহাল দশায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাধারণ মানুষের চলাফেরা করতে কষ্ট হচ্ছে দেখে আমরা ক’জন যুবক মিলে পরিকল্পণা করি সড়ক দুটি সংস্কারের। ১৫-২০ জন যুবক একত্র মিলে নেমে পড়ি সড়ক সংস্কারের কাজে।
তিনি বলেন, আমরা যখন কাজ শুরু করি অনেকেই ইট, পাথর দিয়ে সহযোগীতা করেন। সড়কগুলো আগে থেকে ভাঙা এবং বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় সংস্কার করতে আমাদের দুইদিন লেগেছে। কিছু টাকা লেগেছে আমাদের সংস্কারের সময়। সেই টাকা এলাকাবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের দিয়েছেন। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ১০-১২ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। সড়ক সংস্কারে অংশগ্রহণ করা যুবকরা এ সংস্কার কাজ শেষ করে বেশ উৎফুল্ল মেজাজে দেখা যায়। আগামী দিনে ও এমন মানবিক ও সমাজ সংস্কার কাজে নিজেদের অবস্থান থেকে মেলে ধরার প্রত্যয় প্রকাশ করেন।
তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি