মৌলভীবাজার জেলায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি ও টানা বৃষ্টিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য। জেলার বিভিন্ন স্থানে বের হচ্ছে ক্ষতর চিহ্ন। জমির ফসল, মাছের খামার ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বন্যায় জেলার অনেক সড়ক তলিয়ে যায়। এগুলোর মধ্যে যেসব সড়ক থেকে পানি সরে গেছে, সেখানে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। এগুলোর কোনটি ভেঙে গেছে, কোনটিতে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী স্থানীয়রা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক দিয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্যার পানি নেমে গেলেও ভাঙাচুরা রাস্তা বয়ে বেড়াচ্ছে বন্যার ক্ষত। ভেঙেগেছে জেলার ১৪৫টি সড়কের সাড়ে ৩”শ কি:মি: রাস্তা ও ১১টি ব্রিজ কালভার্ট। যা মেরামত করতে আনুমানিক খরচ সাড়ে ৪’শত কোটি টাকা।
জেলার বিভিন্ন উপজেলার মধ্যে কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, রাজনগর উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাজনগর থেকে বালাগঞ্জ, জুড়ী-ফুলতলা, জুড়ী-লাঠিটিলা, মৌলভীবাজার-কুলাউড়া, মৌলভীবাজার- শমশেরনগর, কুলাউড়া শমশেরনগর সড়ক ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) গ্রামীণ ও আঞ্চলিক সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে ভেঙে গেছে। কোথাও পানির স্রোতে সড়ক বিলীন হয়ে গেছে।
বন্যায় কমলগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৮০ কি:মি: সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো: সাঈফুল আজম। তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৮০ কি:মি: রাস্তার মধ্যে ১০১৫ ফুট রাস্তা পুরোপুরিভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাঁরা রাস্তাগুলোর তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছেন। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সেগুলো সংস্কার করা হবে। কিছু জায়গার কাজ জরুরি হিসেবে চিহ্নিত করে দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ব্যাবসায়ী রুপক দত্ত বলেন, ভাঙাচুরা সড়কে চলাচলে রয়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায় দ্বিগুন সময় লাগছে মানুষের। বেড়েছে পরিবহন ভাড়াও। মৌলভীবাজার এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী, আহমেদ আব্দুল্লা বলেন ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক মেরামত করতে কয়েক বছর সময় লাগবে। তবে এসব সড়কে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করার কথা জানান এ কর্মকর্তা।
তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি