মরণোত্তর দেহদানের সিদ্ধান্ত নিয়ে গর্বিত টালিউডের অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আরজি কর হাসপাতালের সাম্প্রতিক অরাজকতা ও মরদেহ বিক্রির অভিযোগের কারণে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের তদন্তে উঠে আসা তথ্যগুলো কলকাতার পাশাপাশি টালিউডের অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
আরজি কর হাসপাতালে এক চিকিৎসক তরুণীর রহস্যজনক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। মরদেহ বিক্রির চক্র নিয়ে পুলিশ সোর্স সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার ফোনে পাওয়া গেছে মরদেহের সাথে আপত্তিকর ভিডিও। এই ঘটনাগুলো বেরিয়ে আসার পর মরণোত্তর দেহদান নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন ঋতুপর্ণা। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এবং আশা করছেন এই অরাজকতা কমে যাবে।
এক দশক আগে মরণোত্তর দেহদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঋতুপর্ণা সম্প্রতি আরজি কর হাসপাতালের চাঞ্চল্যকর ঘটনাগুলোর পর দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ভারতীয় এক গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আশা করি আমার মৃত্যুর আগে এসব অরাজকতা কমবে।”
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্য দেহদান করা মরদেহের অপব্যবহার ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। তদন্তকারীরা বলছেন, একটি চক্র গত সাত বছরে সরকারি হাসপাতালে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করে ২০০ কোটি টাকারও বেশি লুট করেছে। এই ঘটনাগুলো সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চলচ্চিত্র শিল্পকেও আতঙ্কিত করেছে।
মরণোত্তর দেহদান নিয়ে ঋতুপর্ণার মনে কোনো দ্বিধা ছিল না। তার পরিবারের উৎসাহেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মৃত্যুর পর সমাজের উপকারে আসার উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে আরজি করের ঘটনাগুলো তার মনকে বিচলিত করেছে।
শুটিংয়ের ফাঁকে বর্তমানে ভারতের বাইরে অবস্থান করছেন ঋতুপর্ণা। ব্যবসাসূত্রে তার স্বামী সিঙ্গাপুরে বসবাস করেন এবং তাদের সন্তানরাও বিদেশে পড়ালেখা করছে। এছাড়া টলিউডের অনেকেই মরণোত্তর দেহদান নিয়ে আতঙ্কিত হয়েছেন। পরিচালক সুব্রত সেন এবং অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অপরাজিতা জানিয়েছেন, মৃতদেহের সুরক্ষা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।
আরজি কর হাসপাতালে মরদেহের সাথে ঘটে যাওয়া ভয়ংকর ঘটনাগুলো মরণোত্তর দেহদানের বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তসহ টলিউডের অনেকেই এই পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কিত। তবে ঋতুপর্ণার আশা, ভবিষ্যতে এমন অরাজকতা কমবে এবং তার সিদ্ধান্তের পেছনের সামাজিক দায়বদ্ধতার মর্মার্থ ধরে রাখা সম্ভব হবে।