খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর সংঘর্ষের জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এই সহিংসতার কারণে পুরো জেলা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ এবং রাতের গোলাগুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে দীঘিনালায় পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়, যা রাতে গুলাগুলির রূপ নেয়। সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিরা হলেন জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল চাকমা (৩০)। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর হলেও চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং প্রশাসনের মতে, সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বুধবার এক ব্যক্তিকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মারধরের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে। আহত ব্যক্তি পরে মারা যান, যা উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে। বৃহস্পতিবার বিকেলে দীঘিনালায় বিক্ষোভ চলাকালে পাহাড়িদের দ্বারা বাধা দেওয়ার অভিযোগে সংঘর্ষ শুরু হয়।
বিকেলের সংঘর্ষের সময় পাহাড়িদের ঘরবাড়ি এবং দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় ১০২টি দোকান পুড়ে গেছে, যার মধ্যে ৭৮টি পাহাড়িদের এবং ২৪টি বাঙালিদের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে শহরে ইন্টারনেট সেবা সীমিত করা হয়েছে এবং স্থানীয়রা নিরাপত্তার কারণে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিচ্ছেন।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমা জানান, রাতের সংঘর্ষের পর ১৬ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে তিনজন মারা যান এবং বাকিরা এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই সংঘর্ষের ফলে খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে চেষ্টা চালাচ্ছে এবং প্রশাসন স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক করতে আরও কিছু সময় লাগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রিলাক্স নিউজ ২৪