কোটা সংস্কার আন্দোলনের উত্তাল পরিস্থিতিতে অনেক মন্ত্রী ও এমপি দেশ ছেড়েছেন। দেশজুড়ে সহিংসতার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়েছেন তারা। গত ১৪ জুলাই থেকে শুরু করে ২৯ জুলাই পর্যন্ত মন্ত্রী-এমপিদের এই বিদেশ যাত্রা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
কোটা আন্দোলন এবং দেশজুড়ে সহিংসতার কারণে গত ১৪ জুলাই থেকে বিভিন্ন মন্ত্রী ও এমপি বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, থাইল্যান্ড, চীন ও দুবাই ছিল তাদের গন্তব্যস্থল। আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই বিদেশযাত্রা নিয়ে সরকারি দলের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। অনেক মন্ত্রী-এমপি দলের কঠিন পরিস্থিতিতে বিদেশে চলে যাওয়ায় তাদের প্রতি সমালোচনা উঠেছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, “অনেক লোক দলে উড়ে এসে জুড়ে বসার কারণে এমনটা হয়েছে। দলের পরিস্থিতি খারাপ দেখলেই তারা লুকিয়ে থাকেন।”
অন্যদিকে, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) পরিবারসহ লন্ডনে চলে যান। একই সময়ে কুমিল্লা-১১ আসনের এমপি ও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক পরিবারসহ দুবাই চলে যান। অন্যান্য মন্ত্রী-এমপিরাও বিভিন্ন দেশে পাড়ি দেন। বিশেষ করে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী মালয়েশিয়ায় যান এবং ময়মনসিংহ-৮ আসনের এমপি মাহমুদ হাসান সুমন সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী আমেরিকা থেকে দেশে ফিরে আসেন। ভোলা-৪ আসনের এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব দুবাই যান পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এমপি আমেরিকায় থেকে দেশে ফিরে আসেন। অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান সরকারি সফরে কানাডা যান। চট্টগ্রাম-১০ আসনের এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চু টরন্টো থেকে দেশে ফিরে আসেন।
দেশের এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে মন্ত্রী-এমপিদের বিদেশ যাত্রা এবং ফেরার সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি বা অবনতি ঘটাতে তাদের পদক্ষেপ এবং দায়িত্বশীল আচরণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।