ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ায় আসমা আক্তারকে ভর্তি করা হয় রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে। তার সঙ্গে দুই সন্তানও আক্রান্ত। পাশের শয্যায় আরেক রোগী সানজানার পরিবারেও ডেঙ্গু রোগী তিন জন।
সানজানার স্বামী বলেন, ‘আমরা খুব আশঙ্কার মধ্যে আছি। আমার বড় ছেলেটার জ্বর এসেছিলো। এখন সে একটু সুস্থ্য আছে। আমি এখনও সেইফ আছি, জানিনা কতক্ষণ থাকতে পারবো।’
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যু সবচেয়ে বেশি হয়েছে চলতি মাসের প্রথম ৮ দিনে। যেখানে প্রতি ঘণ্টায় একশো জনের বেশি রোগীকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আর প্রতি আড়াই ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। চলতি মাসের শেষে সর্বোচ্চ সংক্রমণের আশঙ্কা জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো সঠিক চিকিৎসা শুরু না হওয়ায় মৃত্যু বাড়ছে।
মুগদা হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে শতাধিক নতুন রোগীকে ভর্তি করানো হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় সাত হাজার ডেঙ্গু রোগী।
ডেঙ্গু পরীক্ষার চাপে রোগীরা রিপোর্ট পাচ্ছে ২-৩ দিন পরডেঙ্গু পরীক্ষার চাপে রোগীরা রিপোর্ট পাচ্ছে ২-৩ দিন পর
হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, ‘এখন আমার একটাই চ্যালেঞ্জ, রোগী আসার গতিটা কবে নিম্নমুখি হবে। আমরা পারব, আমাদের ঔষধপত্র-পরীক্ষা নিরীক্ষাতেও কোনো সমস্যা হবে না।’
চলতি মাসের প্রথম ৮দিনেই দেশে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ২০ হাজারের বেশি মানুষের। প্রতি দুই মিনিটে তিনজনকে ভর্তি করানো হচ্ছে হাসপাতালে। একই সময়ে মারা গেছেন ৮৯ জন। এর আগে কখনো এক সপ্তাহে এত শনাক্ত ও মৃত্যু হয়নি।
বিসিপিএসের গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রধান অধ্যাপক রেদুয়ানুর রহমান বলেন, ‘এ রোগীগুলো যখন হাসপাতালে আসে তখন প্রথম যে চিকিৎসক ওকে দেখেছে সে যদি বুঝতে পারে যে ডেঙ্গু, শকসিন্ড্রম এবং ওকে যদি সঠিক ম্যানেজমেন্ট দিতে পারে তাহলে রোগীটা মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কম। এই প্রথম ডাক্তার যারা দেখছে তারা হচ্ছে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে বসে আছেন। সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে যেমন ওয়েল ট্রেইনড প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসাররা কিন্তু সেভাবে ওয়েল ট্রেইনড নয়।’
চলতি বছরের এ পর্যন্ত, দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭২ হাজার রোগী। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৩৪০ জন। এরআগে সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল গত বছর, ২৮১ জন।