ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কয়েকদিন যাবত ভারী বর্ষণ সেই সাথে মুহুর্তের এক ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে পাচঁগ্রামের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি। এসময় ঘরের নিচে পড়ে এক গর্ভবতী মহিলার মৃত্যু হয়েছে এবং নারী পুরুষ সহ কমপক্ষে আহত হয়েছেন ৩৫জন। নিহত গৃহবধুর নাম ঝর্না আক্তার (২১), তিনি বড় হামিরদী গ্রামের দিনমজুর শাহাবুদ্দিন শেখের স্ত্রী।
এমনি এক ঘটনা ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের বড় হামিরদী, ছোট হামিরদী, গজারিয়ার কিছু অংশে ও আজিমনগর ইউনিয়নের পুখুরপাড় ও ঈশ্বরদী গ্রামে। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন উপজেলা প্রশাসন ও দুই চেয়ারম্যান দ্বয় সহ স্থানীয় এলাকাবাসী। ঘটনা শুনে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় পরিদর্শন করেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক সহ অন্যান্য সরকারী কর্মকর্তাগণ। এলাকাবাসী সূত্র জানা যায়, কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টি এতে গাছপালা ঘরবাড়ি দুর্বল হয়ে পড়ে। তার মধ্যে মুহুর্তের এক ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড করে দেয় পাঁচ গ্রামের প্রায় ২ থেকে ৩’শ ঘরবাড়ি ও অগণিত গাছপালা। ফরিদপুর- বরিশাল মহাসড়কে গাছপালা পড়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে প্রায় ঘন্টা খানেক।
এ ঘটনায় স্থানীয় হামিরদী ইউপি চেয়ারম্যান খোকন মিয়া জানান, আমার ইউনিয়নে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে গাছ গাছালি, বসত ঘর উপড়ে পড়ে। তবে ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকার হবে। শুক্রবার স্থানীয় এমপি মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ক্ষতিগ্রস্তদের সান্তনা দেন এবং তার নিজ তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অর্থ দেয়ার আশ্বাস দেন। আমাকে লিস্ট করে আজ সন্ধ্যায় তার বাড়ীতে নিয়ে যেতে বলেছেন।
আজিমনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সূত্রে জানা যায়, ঝড়ে ঐ ইউনিয়নের ২টি গ্রামে প্রায় শতাধিক ঘর লন্ডভন্ড করে ফেলেছে, টিউবয়েল পর্যন্ত উপড়ে ফেলেছে। প্রশাসন ও চেয়ারম্যানের নিজ তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। এবিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ এবং রাতের ঘূর্ণিঝড়ে দুই ইউনিয়নের ৪টি গ্রামে প্রায় দু’শ ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এ ঘটনায় এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে।
এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অর্থ সহায়তা করা হয়েছে।
শুক্রবার সারাদিন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার (পিএএ) মহোদয় স্যার। আমরা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, তেল বিতরণ করেছি। নিহতের পরিবারের মাঝে নগদ ২০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছি। জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার পিএএ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান, ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলামসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে তাৎক্ষণিকভাবে ১০ কেজি চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ করেন।