আইন, নীতিমালা ও কর্মকৌশল ঠিকই আছে। তারপরও দেশে অবহেলিত মানসিক স্বাস্থ্যসেবা। মোট স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র শূন্য দশমিক ৪৪ ভাগ বরাদ্দ হয় এই খাতে। নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও চিকিৎসাকেন্দ্রও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, আগামী বছর থেকে উপজেলা পর্যায়েও মিলবে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা ও ওষুধ। দেশের ১৮ ভাগ মানুষই কোনো না কোনো ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। দিন দিন বাড়ছে এই হার।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোহিত কামাল বলেন, ‘পুরুষের তুলনায় দেড় গুণ বেশি নারী মানসিক সমস্যায় ভোগেন। প্রবীণদের মধ্যেও বাড়ছে এ রোগের প্রকোপ। মাদক ও ইন্টারনেট আসক্তির কারণে কয়েক বছরে বেশ অবনতি হয়েছে কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের। ১২ শতাংশ কিশোরই ভুগছে মানসিক সমস্যায়।’ মন ও শরীর- দুটির সুস্থতাই স্বাস্থ্য। কিন্তু পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে এখনো অবহেলিত মানসিক স্বাস্থ্য। সারা দেশে রোগী থাকলেও উপজেলা পর্যায়ে নেই চিকিৎসার ব্যবস্থা। চিকিৎসা ব্যবস্থার বেশিরভাগই রাজধানীকেন্দ্রিক। দেশে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ সাড়ে আটশোর কিছু বেশি।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘দেশে মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও চিকিৎসা বিষয়ে মানুষের মাঝে এখন পর্যন্ত কিছু ভুল ধারণা কাজ করে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে এক্ষেত্রে শিক্ষিত মানুষদের মাঝেও এই হার নিতান্তই কম না। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এখন পর্যন্ত মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা নিয়ে তেমন কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান না। একই সঙ্গে সেসব স্থানে কোনো সচেতনমূলক কর্মসূচিও দেখা যায় না। এ বিষয়ে আসলে ক্যাম্পেইন করা প্রয়োজন।’ সংকট মোকাবিলায় ২০ হাজার চিকিৎসককে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও মিলবে চিকিৎসা ও ওষুধ। দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের তিন দশমিক তিন ভাগ মাদক গ্রহণ করে, যা কিনা মানসিক সমস্যা বাড়ার অন্যতম কারণ।