রাজধানীর রমনা থানার কাকরাইল শান্তিনগর প্লাজায় স্ত্রীর সামনেই কিল ঘুসিতে বাহার (৪৫)নামে এক ট্রাভেল এজেন্সির মালিককে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (১৪ অক্টোবর )বিকাল সোয়া পাঁচটায় তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আনা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত বাহারের স্ত্রী জয়নব বেগম বলেন, আমার চোখের সামনে এম বাহার ওভারসিজ অফিসের ভিতরে আমার বোনের জামাই জাকের,আমার আপন ছোট ভাই ইউনুস ও আমার বোন ফাতেমা বেগম মিলে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। তারা তিনজন মাথার ভিতরে অনেক কিল ঘুসি ও গলাচিপে ধরে ওয়ালের সাথে ধরে রাখে আমার চোখের সামনে। পরে আমার স্বামী নিস্তেজ হয়ে যায়। সে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল। তার হার্টে হয় দুটি ব্লক রয়েছে। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক জানায় আমার স্বামী আর বেঁচে নেই।
তিনি আরো বলেন, আমার বোনের জামাইয়ের দেশের বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। তাকে বলা হয়েছে আজ ভোর পাঁচটায় ফ্লাইট এয়ারপোর্টে তিন ঘন্টা আগে আসতে। কিন্তু তিনি ভেবেছেন বিকাল পাঁচটায় ফ্লাইট। এই নিয়ে অফিসের মধ্যে আমার বোনের জামাই বোন ও আমার ছোট ভাইয়ের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তারা কিল ঘুষির মেরে আমার স্বামীকে মেরে ফেলে।
নিহতের স্ত্রী আরও বলেন, আমার চোখের সামনে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে আমি কিছুই করতে পারিনি। আমার ছয় বছরের জিহাদ নামে একটি ছেলে আছে। তাকে নিয়ে এখন আমি কি করব বুঝে উঠতে পারছি না। সে বাবা ছাড়া কিছুই বোঝে না। তার বাবাকে সে অনেক ডাকাডাকি করছে কিন্তু তার বাবা তো আর কখনো ফিরে আসবে না। আমার এই অবুঝ শিশুটিকে কিভাবে আমি বোঝাবো।
অবুঝ ছয় বছরের শিশু জিহাদ বলছে “ওঠো বাবা ওঠো,মা বাবা কথা কয় না কেন” বলছিল আর কান্না করছিল। কিন্তু সে নিজেই জানে না তার বাবা আর কোনদিন ফিরে আসবেনা। নিহত বাহারের অফিসের স্টাফ মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি আমাদের চোখের সামনেই হয়েছে যেহেতু তাদের পারিবারিক বিষয় সে জন্য আমরা কিছুই বলতে পারিনি। তাদের ছিল ভোর পাঁচটার ফ্লাইট কিন্তু তারা মনে করেছে বিকাল পাঁচটার ফ্লাইট এই নিয়ে তাদের মধ্যে বাক বিতণ্ডার ঘটনায় কিল ঘুষিতে আমাদের মালিক বাহার সাহেব মারা যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা থানার পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ শহিদুল ওসমান মাসুম বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে এসেছি। আমাদের আরেকটি টিমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। কি ঘটনা ঘটেছে কিভাবে তিনি মারা গেছেন সে বিষয়টি আমরা তার স্ত্রীর সাথে এবং ঘটনাস্থলে যিনি উপস্থিত ছিলেন তার সাথে কথা বলছি।