রাজধানীর সিএনজি স্টেশনগুলোতে ব্যাপক গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। গ্যাসের চাপ না থাকায় সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে যানবাহনগুলোকে। তিতাস কর্তৃপক্ষ সংকটের কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, চাহিদা আর যোগানের সমন্বয় না থাকায় গ্যাস সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। গাড়ি চালক ও মালিকরা বলছেন, সোমবার থেকে গ্যাস না পেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টার তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে।
রাজধানীতে রাইড শেয়ারিং-এ গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা হাসান আলী দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও গ্যাস নিতে পারেননি। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, ‘গ্যাস না পেলে তো আমাদের চলা খুব কষ্ট হয়ে যাবে। কিভাবে চলব আমরা? আমরা তো এই গাড়ি দিয়ে ভাড়া চালাই। উবার–পাঠাওয়ে যাত্রী তুলি। গ্যাস না হলে তো পরিবার নিয়ে চলতে পারব না।’ সিএনজি স্টেশনগুলোতে গ্যাসের জন্য শত শত গাড়িকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। আর এতে রাস্তায় দেখা দিয়েছে গাড়ির জটলা। সময়মত গ্যাস না পাওয়ায় আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চালকরা।
অপেক্ষারত এক সিএনজি অটোরিকশা চালক বলেন, ‘সিরিয়াল দিয়েছি তিন ঘণ্টা আগে। এখনও গ্যাস পাইনি। গ্যাস থাকলেও প্রেসার নেই। ৬০০ টাকার গ্যাস নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি মাত্র ৩০ কিলোমিটার। এভাবে কিভাবে পোষাবে? না হলে একেবারে বন্ধ করে দেক। আজকে এখনও গ্যাস নিতে পারি নি। কোথায় পাই, খালি এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে যাচ্ছি।’
সিএনজি স্টেশনগুলো বলছে, সোমবার রাতে কিছু সময়ের জন্য গ্যাস আসলেও মঙ্গলবার গ্যাস পান নি তারা। একটি গ্যাস স্টেশনের কর্মচারি বলেন, ‘এর আগেও সমস্যা ছিল। কিন্তু গত দুই দিন ধরে খুব বেশি সমস্যা দেখা যাচ্ছে। সকাল ৬টা ১৫ বা ২০ এর দিকে গ্যাস চলে যায় গতকাল। আর রাত দেড়টায় গ্যাস আসে। আর আজ সকাল সাড়ে ৬টায় গ্যাস গিয়েছে এখন পর্যন্ত আসেনি। গ্যাসের বিষয়ে কখনও কোনো নোটিশ দেওয়া হয়না। এটা তাদের ইচ্ছামতো। যখন চলে যায়, আমরা বন্ধ রাখি। আবার যখন আসে আমরা চালু করি।’
গ্যাস সংকটের কারণে সমস্যা হওয়ার কথা স্বীকার করে রাজধানীতে গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ্ বলেন, ‘ঘোড়াশাল সার কারখানার একটি ইউনিট চালু হয়েছে যার কারণে চাহিদা বেড়েছে সেখানে। আর সরবরাহ কমেছে ঢাকায়। তাই সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে।’