৩০ ডিসেম্বর (শনিবার) সকালে শহরের চকবাজারস্থ প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে শেরপুর-১ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে অভিযোগ করেন, নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ও ভোটের মাঠে অবস্থান করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতিক বলেন, নির্বাচনের শুরু থেকেই দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া ছানুয়ার হোসেন ছানু এবং তার কতিপয় নেতৃস্থানীয় সমর্থক নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী কাজে থাকা দলীয় নেতা-কর্মীসহ মাঠ পর্যায়ের সমর্থকদের নানাভাবে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। তারা ইতোমধ্যে লছমনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা, বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর ও নৌকা পুড়ানো এবং পাকুড়িয়া ও কামারেরচর ইউনিয়নের ৩টি কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ ও পোস্টার-ব্যানারসহ সামিয়ানা কেটে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভার্চুয়াল সভার দিন কামারেরচর ও চরশেরপুর ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের বাধা ও মারপিট করেছে। এছাড়া তারা প্রতিনিয়ত সরাসরি ও মোবাইল ফোনে নৌকার পক্ষে কাজ না করতে বিভিন্নজনকে হুমকি দিচ্ছে।
হুইপ আতিক বলেন, নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর স্ত্রীসহ কয়েকজন সরকারি কর্মচারী প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও লিফলেটে দলীয় প্রধান শেখ হাছিনার ছবি ব্যবহার করছেন। বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে লিখিতভাবে জানানোর পরও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ওইসব তৎপরতা এখনও থামছে না। বরং নির্বাচনের দিনক্ষণ যতোই ঘনিয়ে আসছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে বিএনপি ও জামায়াতের সন্ত্রাসী, নাশকতা-বিস্ফোরক মামলার আসামি এবং বৈধ অস্ত্র বহন ও প্রদর্শনের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্রধারীদের অবস্থান ততোই বাড়ছে। ব্যবসায়ীসহ কোন কোন মহলে চলছে নীরব চাঁদাবাজী। এতে তারা আতঙ্কে রয়েছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনবিরোধী বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা নির্বাচন বানচাল করতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ও ভোটের মাঠে অবস্থান করছে। এছাড়া জাতীয় পার্টির এক বহিস্কৃত নেতা ও মামলাবাজ-খুনীর বুকে বিদ্রোহী প্রার্থী মাথা রেখে শপথ করে তাকেও মাঠে নামিয়েছেন। এতে শান্তিপূর্ণ ভোট উৎসব বিঘ্নিত হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এজন্য তিনি ভোটের মাঠের প্রকৃত চিত্রসহ তাদের নানা অপতৎপরতা গণমাধ্যমে তুলে ধরতে স্থানীয় সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতিক নিজের বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশা প্রকাশ করে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীর নিজের অবস্থান আঁচ করতে পেরেই ভোটের মাঠে নানা অপকৌশল প্রয়োগ করছেন। কিন্তু শেরপুরকে শান্ত রাখতে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত রাখতে শেরপুরবাসী এবারের নির্বাচনেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবেন না। মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও রেলপথ স্থাপনসহ স্মার্ট শেরপুর গড়তে আবারও নৌকায় ভোট দেবেন তারা। মতবিনিময়কালে নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি, সদস্য সচিব, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফখরুল মজিদ খোকন, সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, সাবেক দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন মুন্না, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্ত ও জেলা তাঁতী লীগের যুগ্ম আহবায়ক সোহেল রানাসহ জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।