/
/
/
চুঙ্গাপুড়া পিঠার উপকরণ ‘ঢলুবাঁশ’ বিলুপ্তির পথে
চুঙ্গাপুড়া পিঠার উপকরণ 'ঢলুবাঁশ' বিলুপ্তির পথে
12 views
Relaks News 24
আপলোড সময় : 4 ঘন্টা আগে
চুঙ্গাপুড়া পিঠার উপকরণ 'ঢলুবাঁশ' বিলুপ্তির পথে
Print Friendly, PDF & Email

মৌলভীবাজার তথা সিলেট বিভাগের প্রাচীন ঐতিহ্য পিঠে-পুলির অন্যতম চুঙ্গাপুড়া পিঠা বিলুপ্তপ্রায় হয়ে যাচ্ছে। আগের মতো এখন আর গ্রামীণ এলাকার বাড়িতে বাড়িতে চুঙ্গাপুড়ার আয়োজন চোঁখে পড়ে না। শীতের রাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে সারারাত চুঙ্গাপুড়ার দৃশ্যও তাই দেখা মেলা দায় হয়ে পড়েছে।

একটা সময় ছিল বাজারে মাছের মেলাও বসতো। সেই মেলা থেকে মাছ কিনে কিংবা হাওর-নদী হতে বড় বড় রুই, কাতলা, চিতল, বোয়াল, পাবদা, কই, মাগুর মাছ ধরে নিয়ে এসে হাল্কা মসলা দিয়ে ভেজে (আঞ্চলিক ভাষায় মাছ বিরান) দিয়ে চুঙ্গাপুড়া পিঠা খাওয়া ছিল মৌলভীবাজার তথা সিলেট বিভাগের একটি অন্যতম ঐতিহ্য। বাড়িতে মেহমান বা নতুন জামাইকে খাবারের শেষে চুঙ্গাপুড়া পিঠা মাছ বিরান আর নারিকেলের পিঠা বা রিসা পরিবেশন না করলে যেন লজ্জায় মাথা কাটা যেত। বর্তমানে সেই দিন আর নেই।

চুঙ্গাপুড়া পিঠা তৈরির প্রধান উপকরণ ঢলু বাঁশ ও বিন্নি ধানের চাল (বিরইন ধানের চাল) সরবরাহ এখন অনেক কমে গেছে। অনেক স্থানে এখন আর আগের মতো চাষাবাদও হয় না। মৌলভীবাজারের বড়লেখার পাথরিয়া পাহাড়, জুড়ীর লাঠিটিলা, রাজনগরসহ বিভিন্ন উপজেলার টিলায় টিলায় ও চা-বাগানের টিলায়, কুলাউড়ার গাজীপুরের পাহাড় ও জুড়ী উপজেলার চুঙ্গাবাড়িতে প্রচুর ঢলুবাঁশ পাওয়া যেতো। তন্মধ্যে চুঙ্গাবাড়ি ও এক সময় প্রসিদ্ধ ছিলো ঢলুবাঁশের জন্যে।

অনেক আগেই বনদস্যু ও ভুমিদস্যু এবং পাহাড়খেকোদের কারণে বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাওয়ায় হারিয়ে গেছে ঢলুবাঁশ। তবে জেলার কিছু কিছু টিলায় এখন ও ঢলুবাঁশ পাওয়া যায়। এদিকে, পাহাড়ে বাঁশ নাই বলে বাজারে ঢলুবাঁশের দামও এখন তাই বেশ চড়া। ব্যবসায়ীরা দূরবর্তী এলাকা থেকে ঢলুবাঁশ ক্রয় করে নিয়ে যান নিজ নিজ উপজেলার বাজারসমূহে বিক্রির আশায়। বাঁশটিও সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।

ঢলুবাঁশ ছাড়া চুঙ্গাপিঠা তৈরি করা যায় না, কারণ ঢলুবাঁশে এক ধরনের তৈলাক্ত রাসায়নিক পদার্থ আছে, যা আগুনে বাঁশের চুঙ্গাকে না পোড়াতে সাহায্য করে। ঢলুবাঁশে অত্যধিক রস থাকায় আগুনে না পুড়ে ভিতরের পিঠা আগুনের তাপে সিদ্ধ হয়। ঢলুবাঁশের চুঙ্গা দিয়ে ভিন্ন স্বাদের পিঠা তৈরি করা করা হয়ে থাকে। কোনো কোনো জায়গায় চুঙ্গার ভেতরে বিন্নি চাল, দুধ, চিনি, নারিকেল ও চালের গুড়া দিয়ে পিঠা তৈরি করা হয়। পিঠা তৈরি হয়ে গেলে মোমবাতির মতো চুঙ্গা থেকে পিঠা আলাদা হয়ে যায়। চুঙ্গাপিঠা পোড়াতে আবার প্রচুর পরিমাণে খেড় (নেরা) দরকার পড়ে। খড়ও এখন সময়ের প্রয়োজনে দাম একটু বেশি।

একটা সময় ছিলো শীতের মৌসুমে গ্রামীণ জনপদে প্রায়ই বাজারে মাছের মেলা বসত, বিশেষ করে সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব পৌষ সংক্রান্তির সময় এ বাঁশগুলো কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ, আদমপুর, মুন্সীবাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে দেখা গেছে। কমলগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর ঢলুবাঁশ পাওয়া যেতো। তন্মধ্যে চুঙ্গাবাড়িও এক সময় প্রসিদ্ধ ছিলো ঢলুবাঁশের জন্যে। অনেক আগেই বনদস্যু ও ভুমিদস্যু এবং পাহাড়খেকোদের কারণে বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাওয়ায় হারিয়ে গেছে ঢলুবাঁশ। তবে জেলার কিছু কিছু টিলায় এখনও ঢলুবাঁশ পাওয়া যায়।

পিঠা তৈরি করার জন্য উপজেলার মুন্সীবাজারে ঢলুবাঁশ নিতে আসা নিবাস চন্দ আব্দুল বাছিত খান বলেন, ‘আসলে সব সময় তো এই জিনিসগুলো পাওয়া যায় না। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে এগুলো খুব কম পরিমাণ বাজারে উঠেছে। আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগেও প্রচুর দেখা যেত। এখন কালের পরিবর্তনে হারিয়ে বসেছে। বাজার আসার সময় পরিবারের সদস্যরা বললো পিঠা তৈরি করার জন্য এই ঢলুবাঁশ পেলে নিয়ে যেতে, তাই কয়েকটা বাজারগুলো ঘুরে দেখলাম পাইনি এখন মুন্সীবাজারে স্বল্প পরিমাণ নিয়ে এসেছে এখন বিক্রেতা আমি সেখান থেকে নিয়ে যাচ্ছি বাসায়।’ কমলগঞ্জ উপজেলার লেখক-গবেষক ও উন্নয়নচিন্তক আহমদ সিরাজ জানান, ‘আগে কম-বেশি সবার বাড়িতে ঢলু বাঁশ ছিল। এখন সেই বাঁশ আগের মতো নেই। এই বাঁশ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। একসময় এই ঢলুবাঁশ দিয়ে চুঙ্গাপুড়ার ধুম লেগেই থাকত।

নিউজটি করেছেন : তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
{{ reviewsTotal }}{{ options.labels.singularReviewCountLabel }}
{{ reviewsTotal }}{{ options.labels.pluralReviewCountLabel }}
{{ options.labels.newReviewButton }}
{{ userData.canReview.message }}

এ জাতীয় আরো খবর

শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা সেই ব্যক্তি মারা গেছেন
শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা সেই ব্যক্তি মার...
৫৭ বছর বয়সে পুলিশ সদস্যের এসএসসি পাস
৫৭ বছর বয়সে পুলিশ সদস্যের এসএসসি পাস
মামার স্বার্থে ভাগিনা নির্বাচন প্রত্যাহার
মামার স্বার্থে ভাগিনা নির্বাচন প্রত্যাহার
সন্তানের ‘চিকিৎসা করাতে না পেরে’ আত্মহত্যা করলেন মা
সন্তানের ‘চিকিৎসা করাতে না পেরে’ আত্মহত্যা করলেন ম...
হরিপুরে পরীক্ষায় ফেল করায় ছাত্রীর আত্মহত্যা 
হরিপুরে পরীক্ষায় ফেল করায় ছাত্রীর আত্মহত্যা 
কাউখালীতে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালিত
কাউখালীতে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালিত
বিশ্ব মা দিবসে কেমন আছেন ফিলিস্তিনি মায়েরা
বিশ্ব মা দিবসে কেমন আছেন ফিলিস্তিনি মায়েরা
আজ বিশ্ব মা দিবসে যেসব উপহার দিয়ে চমকে দিতে পারেন মা’কে
আজ বিশ্ব মা দিবসে যেসব উপহার দিয়ে চমকে দিতে পারেন ...
এসএসসিতে পাসের হার ৮৩.০৪, এগিয়ে মেয়েরা
এসএসসিতে পাসের হার ৮৩.০৪, এগিয়ে মেয়েরা
মৌলভীবাজারে প্রথম রাজনীতির মাঠে ট্রান্সজেন্ডার নেতা
মৌলভীবাজারে প্রথম রাজনীতির মাঠে ট্রান্সজেন্ডার নেত...
শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা সেই ব্যক্তি মারা গেছেন
শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা সেই ব্যক্তি মার...
৫৭ বছর বয়সে পুলিশ সদস্যের এসএসসি পাস
৫৭ বছর বয়সে পুলিশ সদস্যের এসএসসি পাস
মামার স্বার্থে ভাগিনা নির্বাচন প্রত্যাহার
মামার স্বার্থে ভাগিনা নির্বাচন প্রত্যাহার
সন্তানের ‘চিকিৎসা করাতে না পেরে’ আত্মহত্যা করলেন মা
সন্তানের ‘চিকিৎসা করাতে না পেরে’ আত্মহত্যা করলেন ম...
হরিপুরে পরীক্ষায় ফেল করায় ছাত্রীর আত্মহত্যা 
হরিপুরে পরীক্ষায় ফেল করায় ছাত্রীর আত্মহত্যা 
কাউখালীতে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালিত
কাউখালীতে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালিত

Log in

Not registered? Join us FREE