সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য সৌদি আরব সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো দুম্বার মাংস ইউপি চেয়ারম্যানরা নিজেদের পেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই মাংসের দেখা পায়নি ইউপি সদস্য, গরিব ও দুস্থরা। দুম্বার মাংস বিতরণের তালিকা অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ২ কার্টন, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ২ কার্টন করে মাংস পেয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের দায়িত্বে প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে দেওয়া হয়েছে ২ কার্টন করে দুম্বা;/র মাংস।
সৌদি আরব সরকারের দেওয়া মাংসগুলো ইউপি সদস্যদের সমন্বয়ে দুস্তদের মাঝে বিতরণ করার কথা থাকলেও এই লিল্লার মাংস ডুকেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের পেটে তাই এর দেখা পায়নি ইউপি সদস্যরা এমন অভিযোগ তাদের। উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শফিকুর রহমান, জিয়াউল ইসলাম, আব্দুল করিম,সুলতান আহমদ,মোহন মালা,মিরা রানী নাথ জানান, লোকমুখে শুনতেছি সৌদি সরকার দুম্বার মাংস দিয়েছেন। কিন্তু আজও এর দেখা পায়নি। সৌদি সরকার গরীব অসহায় মানুষদের জন্য প্রতিবছর দুম্বার মাংস দিচ্ছেন কিন্তু চেয়ারম্যান সাহেব এগুলো কি করেন তা আমরা আর জানিনা। গতবছরও শুনেছিলাম ইউনিয়ন পরিষদে দুম্বার মাংস এসেছে পরে আর এর দেখা পায়নি।
একই অভিযোগ করেছেন লক্ষিপুর ইউনিয়নের পরিষদের সদস্য সোহেল আহমদ মিন্টু, মোহাম্মদ আলী,দোয়ারা সদর ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক। লক্ষীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য(প্যানেল চেয়ারম্যান) সোহেল আহমদ(মিন্টু) বলেন,দুম্বার মাংস আসছে কিনা আমার জানা নেই। অফিশিয়াল কোন রকম সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে লোকমুখে শুনছি মাংস আসছে। এগুলোত গরীব অসহায় মানুষের জন্য আসে কিন্তু মাংসগুলো প্রতি বছর কোথায় যায়,কি করে এব্যাপারে চেয়ারম্যান সাহেব ভালো বলতে পারবেন।
এবিষয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো.আম্বিয়া আহমদ বলেন, দরিদ্র ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রতিবছর বাংলাদেশে দুম্বার মাংস পাঠায় সৌদি সরকার। তালিকা অনুযায়ী দুম্বার মাংস দুস্থ, এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বিতরণের নির্দেশ দেওয়া আছে। সেই অনুযায়ী প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ২ টি করে কার্টন দিয়েছেন এবং নির্দেশনা দিয়েছেন তালিকা অনুযায়ী মাদ্রাসা ও দুস্থদের মধ্যে মাংসগুলো বিতরণের জন্য। উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ২৪ কার্টন মাংস বরাদ্দ দেওয়া হয়। ১৫ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদে বরাদ্দ দেওয়া এ মাংস আসে। প্রতিটি কার্টনে ২০ কেজি করে মাংস থাকার কথা। সে হিসাবে ২৪ কার্টনে ৪৮০ কেজি মাংস ছিল। ওই রাতেই দুম্বার মাংসের কার্টনগুলো বিতরণ করা হয়।
দুম্বার মাংস বিতরণের তালিকা অনুযায়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যন ২ কার্টন, ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা)১ কার্টন ও ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ ১ কার্টন করে মাংস পেয়েছেন ও দুটি মাদ্রাসায় ২ কার্টন দেওয়া হয়েছে। উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন পরিষদে ২ কার্টন করে মাংস দেওয়া হয়। জানতে চাইলে দুম্বার মাংস আত্মসাতের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে লক্ষিপুর ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক জানান,দুম্বার মাংস পাওয়ার সাথে সাথে বিতরণ করা হয়েছে। যে সকল ইউপি সদস্যরা অভিযোগ দিয়েছেন তারা আমার প্রতিপক্ষ।
দোহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামিমুল ইসলাম শামিম বলেন,ইউপি সদস্যরা তাদের নিজেদের হাতে এনে এগুলা বিতরণ করেছে আমি এবিষয়ে কিছি জানিনা। দোয়ারা সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বলেন,দুম্বার গোস্ত গুলা হঠাৎ আসছে তাই তড়িঘড়ি করে যে ইউপি সদস্যকে কাছে পেয়েছি দিয়েছি বিতরণ করার জন্য। কিছু বাকি ছিলো তাও দিয়ে দিতেছি। ইউপি চেয়ারম্যান নিজেদের মাঝে মাংস ভাগ করে নেওয়ার বিষয়ে পিআইও আম্বিয়া আহমদ বলেন, জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের এলাকার দুস্তদের দেওয়ার কথা বলে মাংস নিয়েছেন। মাংস বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে, খোঁজখবর নিয়ে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।