আবারও ভাঙনের মুখে জাতীয় পার্টি। তবে পদত্যাগী নেতাদের রওশন এরশাদের নেতৃত্বে দল পুনর্গঠনের ঘোষণার পরোয়া করছেন না দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলছেন, আগেও কয়েকবার এমন চেষ্টা হয়েছে। তাতে মূল জাতীয় পার্টির কোনো ক্ষতি হয়নি। নতুন দল গঠন হলেও স্বাগত জানাবেন তাঁরা।
গত ৩৭ বছরে পাঁচবার ভাঙনের মুখে পড়েছে জাতীয় পার্টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই নানা অভিযোগে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় দলটির একাংশ। সম্প্রতি দল থেকে পদত্যাগ করেন ৬০০–এর বেশি নেতা–কর্মী। এসব নেতারা দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের নেতৃত্বে কাউন্সিলের ঘোষণা দেন।
এ অবস্থায় দলের মহাসচিবের প্রশ্ন, যে জাতীয় পার্টি কয়েক দিন আগে ঢাকা-১৮ আসনে কেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়ারও লোক পায়নি, সেখানে পদত্যাগ করার এত সদস্য এল কোথা থেকে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সক্রিয় কর্মী যে এজেন্ট দেব, সেটি আমরা খুঁজে হয়রান হয়ে গেছি। এখন সেন্টু সাহেবের ৭০০ কর্মী পদত্যাগ করে এই কর্মী আকাশ থেকে আসল কি না—বিষয়টা গবেষণার। আমরা এটা গবেষণা করে দেখব এসব কর্মী কোথা থেকে এল। এত কর্মী আমার দলে আছে এটা জানা ছিল না।’
দল ভাঙনের শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলছেন, রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নতুন দল গঠন হলে স্বাগত জানাবে জাতীয় পার্টি। তিনি বলেন, ‘স্যারের (এইচ এম এরশাদ) আদর্শ প্রতিষ্ঠায় তারা একটি দল গঠন করলে স্বাগতম। এতে কোনো সমস্যা নেই। জাতীয় পার্টি থেকে তো এর আগে অনেকেই চলে গেছে তাতে কি আসে যায়। আমি চলে গেলেও জাতীয় পার্টির কোনো ক্ষতি হবে না। জিএম কাদেরের নেতৃত্বে এই দল আছে এবং তাঁর নেতৃত্বে যে দল আছে সেটিই জাতীয় পার্টি।’
এদিকে বর্তমান চেয়াম্যান ও মহাসচিবের ব্যর্থতায় জাতীয় পার্টি আবারও সংকটে পড়েছে দাবি করে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলছেন পদত্যাগী ও বহিষ্কৃত নেতারা। জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা সুনীল শুভ রায় বলেন, ‘ওনাদের (জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও চেয়ারম্যান) ব্যর্থতাটা আমরা দেখেছি। সেই ব্যর্থতার জন্য ওনাদের পদত্যাগ চেয়েছি। ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে ম্যাডাম এরশাদের (রওশন এরশাদ) যে ডাক আসছে সেই ডাকের প্রতি আমাদের সাড়া দিতে হচ্ছে বা দিচ্ছি। আমরা সানন্দে তাঁর আহ্বানকে আমরা গ্রহণ করছি।’ শিগগিরই দলের আরও একটি বড় অংশ পদত্যাগ করে জাতীয় পার্টি পুনর্গঠনের কাজে যোগ দেবেন বলেও জানান পদত্যাগী ও বহিষ্কৃত নেতারা।