মিয়ানমারে তরুণ বয়সী সব নারী-পুরুষের জন্য সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করেছে দেশটির সামরিক সরকার। স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য মিয়ানমারে লড়াইরত সশস্ত্র বিদ্রোহীদের মোকাবিলায় সেনাবাহিনী যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখনই এলো এমন ঘোষণা। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সব পুরুষ ও ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী সব নারীকে সামরিক বাহিনীর অধীনে দুই বছর কাজ করতে হবে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এদিকে এক বিবৃতিতে জান্তা বলেছে, এর জন্য শীঘ্রই প্রয়োজনীয় উপবিধি, পদ্ধতি, ঘোষণাপত্র, বিজ্ঞপ্তি এবং নির্দেশাবলি প্রকাশ করবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগের এই আইনটি ২০১০ সালে প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা কার্যকর করা হয়নি।
এর আগে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারের পার্লামেন্টারি নির্বাচনে অং সান সুচির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ৪১২ আসনের মধ্যে ৩৪৬টিতে জয় পায়। কিন্তু অধিবেশন শুরুর প্রাক্কালে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
এরপর ২০২১ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে তাদের নিপীড়ন-নির্যাতন ও হামলায় অন্তত সাড়ে চার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। বন্দী করা হয়েছে ২৫ হাজার মানুষকে। জান্তা বাহিনীর নৃশংস হামলায় মিয়ানমার জুড়ে অন্তত ৭৮ হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মিসহ দেশটির একাধিক গণতন্ত্রপন্থি সংগঠন জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। এদিকে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্যে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সংখ্যাও বাড়ছে। বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা দলে দলে আশ্রয় নিচ্ছে বাংলাদেশে।