ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সীমানার ভিতরে এবং আশেপাশের ফুটপাত থেকে ১০/১২ দিন পরপর মিলছে অজ্ঞাত মরদেহ। এ যেন মরদেহ রেখে যাওয়ার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। তেমনি আজ বৃহস্পতিবার(২৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকা মেডিকেলের নার্সিং কলেজের সামনে ফুটপাত থেকে অজ্ঞাত নামা (৬০) বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোঃ বাচ্চু মিয়া জানান, আজ সকালে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাত ওই বৃদ্ধকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে আনা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহটি জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি শাহবাগ থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, অজ্ঞাত যাদেরকেই পাওয়া যাচ্ছে মৃত অবস্থায় তারা অধিকাংশই ভাসমান হওয়ায় কখনো হাইকোর্ট, কখনো শহীদ মিনারের আশেপাশে থাকতো। কিন্তু ওই সমস্ত এলাকাগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করায় তারা এখন ঢাকা মেডিকেলের আশে পাশের ফুটপাত, ঢাকা মেডিকেলের বহিঃ বিভাগের পাশের ফুটপাত বা এম্বুলেন্স রাখার গেরেজে থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমরা অনেক সময় তাদেরকে এখান থেকে সরিয়ে দেই ।কিন্তু রাতের বেলা তারা আবার সেখানে আসে। আমাদের অনুপস্থিতি তারা পুনরায় ঐ সমস্ত জায়গায় ঘুমায় এবং একসময় মারা যায়।
এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতি ১০/১২ দিন পর পরই জরুরি বিভাগের আশেপাশে, বহির্বিভাগের পাশের ফুটপাতে অথবা বাগান গেটের ফুটপাতে আবার কখনো হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের গ্যারেজে অজ্ঞাত মরদেহ গুলো পাওয়া যাচ্ছে। এসব মরদেহের কোনটির দেহে পচন ধরে কোন অংশ পড়ে গেছে বা পচে গেছে। আবার কখনো হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে আশেপাশের ফুটপাতে বা গ্যারেজে রাত্রি যাপনের সময় মৃত্যু হয় তাদের। আবার কখনো তাদের পরিবার অবহেলা করে তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলে ফেলে রেখে যায়।
অবাক করা বিষয় হলেও সত্যি যে ,অজ্ঞাত আহত ব্যক্তিকে কোন পথচারী উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এলে বিরম্বনায় পরেন তারা। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত গুরুতর আহত ওই ব্যক্তির দায়িত্ব নিতে চান না। বা তাদেরকে ভর্তির কোন ব্যবস্থাও করাতে চান না।যদিও ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে সমাজসেবা অধিদপ্তরের একটি সংস্থা রয়েছে এ সমস্ত অজ্ঞাত বা দরিদ্র রোগীদের সেবা করার জন্য। কিন্তু বাস্তবে ওই সমাজসেবা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোন সহায়তাই করেন না।
শাহবাগ থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) জুবাইন ফেরদৌস জানান প্রাথমিক তদন্তে আমরা ওই বৃদ্ধের পরিচয় জানতে পারেনি। তাই প্রযুক্তির সহায়তায় তার নাম পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যদিও হাসপাতালে সমাজসেবা অধিদপ্তরের একটি সংস্থা রয়েছে এ সমস্ত অজ্ঞাত বা দরিদ্র রোগীদের সেবা করার জন্য।