গাজীপুরের শ্রীপুরে গৃহবধূকে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যার পর গায়ে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। রাতে নির্যাতনের পর বাড়ির পাশে কলাবাগানের ভেতর নির্জন স্থানে পুড়িয়ে মারা হয় গৃহবধূকে। এমন অভিযোগ নিহতের স্বজনদের। স্বজনরা সারারাত খোজাখুজি করেও গৃহবধূর সন্ধান পায়নি। সকালে বাড়ির অদূরে কলাবাগানের ভেতর পুরো শরীর আগুনে পোড়ানো মৃতদেহ দেখতে পায়। ঘটনার পর থেকে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে অভিযুক্ত স্বামী। তবে প্রতিবেশীরা বলছে স্বামীর নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে শরীর আগুন জ্বালিয়ে আত্নহত্যা করেছে। পুলিশ বলছে মৃতদেহে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করে খুনীরা।
বৃহস্পতিবার(২৯ ফেব্রুয়ারি)সকালে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের গুতারবাজার এলাকার আনসার ক্যাম্পের পাশে কলাবাগানের ভেতর এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ মালেকা বানু (৩৫) উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের কাঠমিস্ত্রী বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী।
নিহত গৃহবধূর ছোটভাই মোঃ সুজন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, বিগত ২০ বছর পূর্বে বাচ্চু মিয়ার সাথে বোনের বিয়ে হয়। তার স্বামী দীর্ঘ দিন ধরে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেয়ার জন্য শারীরিক মানষিক নির্যাতন করতো। পনেরো দিন আগেও তাদের মধ্যে মারধরে ঘটনা ঘটেছে। এর ধারাবাহিকতায় গত বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে আমাদের জানানো হয় মালেকাকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। এরপর রাতে আমরা অনেক খোজাখোঁজি করে তার সন্ধান করতে পারি নাই।
বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে জানতে পারি বাড়ির অদূরে কলাবাগানে আগুনে পোড়ানো বোনের লাশ পরে আছে। এরপর আমরা কয়েকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আগুন পোড়ানে বিকৃত মরদেহ পরে আছে কলাবাগানে। বোনের স্বামীর বাড়ির অনন্য লোকজন জানায় মালেকা গায়ে আগুন দিয়ে আত্নহত্যা করেছে। রাতে মালেকার সাথে স্বামী বাচ্চু তাকে অনেক মারধর করছে। কিন্তু আমার বোন মালেকা আমাদেরকে জানিয়ে তার স্বামী বাচ্চু টাকার জন্য তাকে নির্যাতন করছে। নির্যাতনের পর তার স্বামী বাচ্চু আমার বোনকে পুড়িয়ে মারে। পরে আত্নহত্যার নাটক সাজায়। আমার বোন সাত বছরের ছোট ছেলে রেখে শরীরে আগুন দিয়ে আত্নহত্যা করতে পারে না। তিনি আরও জানান, তার স্বামী তাকে নির্যাতন করে খুন করবে, জ্বালিয়ে মারবে এমন হুমকি সব সময় দিয়ে আসছে।
নিহত গৃহবধূর ছেলে মানিক মিয়া জানায়, বাবা মায়ের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হয়,। গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ওয়ার্ড সদস্য মোঃ আব্দুস সালাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীর পোড়ানো বিকৃত মরদেহ দেখতে পাই। পুলিশকে খবর দেয়া হয়েছে। গাজীপুর জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কালিয়াকৈর সার্কেল আজমীর হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্ত চলছে। ধারণা করা হচ্ছে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর গৃহবধূর গায়ে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে আত্নহত্যার নাটক সাজিয়ে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা চেষ্টা চালায়।