গ্রীষ্মের শুরুতে রাজধানীতে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভালো থাকলেও লোডশেডিং ভোগান্তি বেড়েছে গ্রামাঞ্চলে। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগ এই মৌসুমে সর্বোচ্চ ১ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিংয়ের ধারণা করছে। বিদ্যুতের সরবরাহ বাড়াতে চাহিদামত গ্যাসপ্রাপ্তি এবং তরল জ্বালানির আমদানিকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
গ্রীষ্মে খরতাপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে বিদ্যুতের চাহিদা। এসময় সেচ, বৈদ্যুতিক পাখা ও শীতাতপ যন্ত্রের ব্যবহারে চাপ বাড়ে। তবে, জ্বালানির অভাবে চাহিদামত বিদ্যুৎ উৎপাদন না থাকায় লোডশেডিং করতে হয় সরবরাহকারী সংস্থাকে। গত বছর ২৫ শতাংশের বেশি লোডশেডিং করে পল্লী বিদ্যুৎ। এবার ১২ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য থাকলেও গ্রামে পরিস্থিতি নাজুক। মুন্সিগঞ্জের এক বাসিন্দা বলেন, ‘ঠিক ইফতারের আগে আগে কারেন্ট চলে যায়। কারেন্ট চলে গেলে বাতি পাওয়া যায় না, অন্ধকার থাকে। অথবা নামাজের সময় ফ্যান ঘোরে না।’
ঢাকার কেরানীগঞ্জের এক বাসিন্দা বলেন, ‘খুবই সমস্যা করছে কারেন্ট। সারাদিনে মনে হয়না তিন চার ঘণ্টার বেশি কারেন্ট থাকে।’ গত গ্রীষ্ম মৌসুমে লোডশেডিং ২ হাজার মেগাওয়াট ছাড়ায়। এবার তা অর্ধেকে নামাতে ১৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসে ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য। পাশাপাশি কয়লা ও আমদানির বিদ্যুৎ ব্যবহারে জোর দিচ্ছে সরকার। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘আমাদের যদি কয়লা, গ্যাস এবং অন্যান্য যে কেন্দ্রগুলো আছে, যেমন আমরা কাপ্তাই থেকে কিছু পাই, আমদানি থেকে কিছু বিদ্যুৎ পাই, দিনের বেলা সোলার পাই। এরপরে যেটুকু আমাদের ফুয়েল থেকে দরকার সে ব্যবস্থাও হবে। এটুকু আমরা আশ্বাস পেয়েছি।
মার্চ মাসে দৈনিক ১২ হাজার মেগাওয়াটের মত বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। এপ্রিলে তাপমাত্রা বাড়লেও ঈদের ছুটিতে চাহিদা বাড়বে না। তাই বিশ্লেষকরা চলতি মাসে বিদ্যুতে বড় সংকট দেখছেন না। তবে, সেপ্টেম্বরের মধ্যে আসতে পারে চ্যালেঞ্জিং সময়। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ মোল্লা আমজাদ বলেন, ‘কিছু পয়সা কিন্তু দিতে হবে, কয়লা আমদানি যেটা চলছে সেখানে। কয়লা আমদানি করতে এখন কিন্তু মাসে ১৫০ থেক ৬০ মিলিয়ন ডলার লাগে। চারটা পাওয়ার প্ল্যান্ট যদি বিবেচনায় রাখেন। আবার সেপ্টেম্বরের পর কিন্তু আইপিপিগুলোকেও পেমেন্ট দেওয়া হয়নি। তাদেরকেও পেমেন্ট দিতে হবে।’ দেশের বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৬ হাজার ৮৮৪ মেগাওয়াট। এরমধ্যে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আসে ১২ হাজারের মত। আর প্রায় ১১ হাজার মেগাওয়াট আসে আসে ফার্নেস ওয়েল ও কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে।