বাংলা বর্ষবরণ আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। বড় আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রাকে রাঙিয়ে তুলতে দম ফেলার ফুসরত নেই চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এবার ‘দূর করো আত্মকেন্দ্রিকতা, আপনি জ্বালো এই তো আলো’–এই আহ্বানে ঊষালগ্নে রমনার বটমূলে পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণ করবে ছায়ানট।
নতুন বছরকে বরণ করে নিতে হাতে আছে আর মাত্র কয়েকটি দিন। এর পরই উদযাপন-উৎসবে মাতবে পুরোদেশ। বর্ষবরণের সবচেয়ে আকর্ষণীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের পুরো প্রস্তুতি। দিন যত এগিয়ে আসছে ব্যস্ততাও বাড়ছে কর্মীদের। ‘আমরা তো তিমির বিনাশী’-প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাবির চারুকলা অনুষদে ১৯ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি। পহেলা বৈশাখ ১৪৩১, রোববার সকাল ৯টায় বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। হাতি, টেপা পুতুলসহ চারটি কাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে, যার প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন। কেমন হচ্ছে এবারের আয়োজন, তা দেখতেও ভিড় করছেন অনেকে।
এদিকে, রমনার বটমূলে, ছায়ানটের আয়োজনে ভোরের আলো ফুটতেই আহির ভৈরব রাগে, বাঁশির সুরে স্বাগত জানানো হবে নববর্ষের। শনিবার, ধানমন্ডিতে ছায়ানট ভবনে এর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এ দিন ভোরের সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হবে অনুষ্ঠান। হবে আবৃত্তি, একক ও দলীয়ভাবে পরিবেশিত হবে প্রকৃতির গান; মানবপ্রেম, দেশপ্রেম, আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী। থাকবে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেম ও প্রকৃতির গান। আহ্বান জানানো হবে হাতে হাত রেখে সবাইকে একসঙ্গে চলার।
ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা বলেন, ‘এবারের নববর্ষের প্রথম প্রভাতে আমরা মানুষের জয়গান করবো। ভোগবাদ নয়, স্বার্থপরতা নয়, মনুষত্বকে পাওয়ার অভিলাসী ছায়ানটের আহ্বান স্বাভাবিকতার সাধনা এবং সম্প্রতির ধ্যান। দূর করো আত্মকেন্দ্রীকতা, আপনি জ্বালো এই তো আলো।’ রমনার বটমূলে বর্ষবরণ সার্থক করতে প্রায় আড়াই মাস আগে থেকে গান তোলা, আর গলা মেলানোর কাজে নেমেছেন প্রায় দেড়শ শিল্পী। ভোগবাদ বা স্বার্থপরতা নয়, মনুষ্যত্বকে পাওয়ার অভিলাষী বার্তা থাকবে ছায়ানটের আহ্বানে।