দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল মঞ্জু শেখ। ইচ্ছে ছিল বিসিএস পাস করে শিক্ষক হওয়ার। কিন্তু সে স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল তার। গোপালগঞ্জ রাজ পাট গ্রামের তিন ভাই এক বোনের মধ্যে মঞ্জু শেখ ছিল দ্বিতীয়। গতকাল সোমবার(২১ আগষ্ট) সন্ধ্যায় স্যার সলিমুল্লাহ(এস এম)হলের ১৬৫ নম্বর রুমে ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে থাকে। পরে পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
আজ বিকেলের দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে এ প্রতিনিধিকে মঞ্জু শেখের বড় ভাই রাজু শেখ বলেন, আমার ভাই একজন মেধাবী ছাত্র ছিল। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার রাজপাট হাই স্কুল থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করে এবং রাজপাট কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়। বাংলা বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করে মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল সে। মুঠো ফোনে আমরা জানতে পারি আমার ভাই গলায় মাফলার পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ওই রাতেই আমরা ঢাকায় চলে আসি। আজ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আমরা মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করেছি। সেখানে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি একটি বেসরকারী ব্যাংকে চাকরি করি। তার লেখাপড়ার সমস্ত খরচ আমি চালাই। গত পরশুদিন রবিবার আমার সাথে মুঠো ফোনে কথা হয়। সে জানায় তার কয়েকটি প্যান্ট কেনা লাগবে। আমি বললাম ঠিক আছে দুদিন পরে এসে আমি প্যান্ট কিনে দিবো। আমি আরো জিজ্ঞাসা করলাম টাকা পয়সা আছে কিনা। সে বলল চলার মত টাকা আমার কাছে আছে। কিন্তু আমার ভাইকে সেই প্যান্ট আর কিনে দেয়া হলো না।তার ইচ্ছা ছিল বিসিএস দিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে শিক্ষক হওয়ার। কিন্তু তার সে স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল।
মঞ্জুর মৃত্যুর পেছনে কোন কারণ জানতে পারলেন কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তার সাথে কথা বলে কখনোই হতাশা বা কোন ধরনের সমস্যাই খুঁজে পাইনি। কি কারনে আমার ভাই এমন একটা কাজ করলো সে বিষয়টাও এখনো জানতে পারিনি।তবে একটি বিষয় আমার কাছে ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। তার রুমে অনেকগুলা বন্ধু থাকে। কিন্তু আজকে এসে আমি কাউকেই পেলাম না। এখানে অন্য কোন কারণ আছে কিনা সে বিষয়টি ও বুঝতে পারছি না। তাদের একজন রুমমেট বন্ধু মারা গেল তাদের উচিত ছিল না এখানে এসে আমাদের সাথে কথা বলা এবং আমাদের সমবেদনা জানানো। কি এমন কারণ যে তারা এসে আমাদের সাথে কথা বলতে পারল না। শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই)টিপু সুলতান বলেন, গতকাল আমরা তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাই। আজ দুপুরে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।