ঢাকার বাসা থেকে বন্ধুর জন্মদিনের কথা বলে বেরিয়েছিল কিশোর নুরনবী। চট্টগ্রাম থেকে ফিরল লাশ হয়ে। স্বজনেরা বলছেন, ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ না দেওয়ায় হত্যা করা হয়েছে তাকে। থানায় জিডি করেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ তাদের। তবে তা অস্বীকার করে পুলিশ বলছে, অপহরণকারীদের ধরতে অভিযান চলছে।
রাজধানীর ধলপুরের কিশোর নুরনবী নিখোঁজ হয় গত ২১ আগস্ট। বন্ধুর জন্মদিনের কথা বলে বেরিয়য়ে বাসায় না ফেরায় যাত্রাবাড়ী থানায় পরদিন জিডি করে পরিবার। তবে এরই মধ্যে নুরনবীর বাবাকে ফোন করে দাবি করা হয় ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ। পাঠানো হয় ওই কিশোরের ভিডিও। তাকে ভারতে পাচারের হুমকিতে কিছু টাকাও দেন স্বজনেরা।
নিহত নুরনবীর বাবা গোলাম রসুল বলেন, “গত সোমবার আমার ছেলে নূর নবী ও তার বন্ধু হোসেন বাসা থেকে বের হয়। পরে তারা জানতে পারেন হোসেনের জন্মদিন উদ্যাপন করার জন্য বন্ধুকে নিয়ে হোসেন চট্টগ্রামে গেছে। ভেবেছিলাম, দু–এক দিন পর বাসায় ফিরে আসবে। চার দিন পর লাশ হয়ে ফিরেছে”। এরপরও অপহরণকারীরা টালবাহানা শুরু করলে- ভিডিও দেখে নুরনবী চট্টগ্রামে আছে বুঝতে পেরে সেখানে যান স্বজনেরা। শুক্রবার পাঁচনাইশ থানা থেকে জানানো হয় মরদেহ আছে চট্টগ্রাম মেডিকেলে। মামলার পর সেখান থেকেই হয় মরদেহ হস্তান্তর।
“রান্নাবান্না (বাবুর্চি) করে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। ৫০ হাজার টাকা কোথা থেকে দেব। ছেলে বন্ধুর সঙ্গে চট্টগ্রাম এসে লাশ হলো। আর কোনো বাবার ছেলে যাতে লাশ না হয়”- বলেন নুরনবীর বাবা গোলাম রসুল। সিএমপির পাঁচনাইশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, “ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দুই কিশোর চট্টগ্রামে এসে অপহরণের শিকার হয়েছে। তাদের পরিচিত কেউ এই কাজে জড়িত, নাকি পেশাদার অপহরণকারীরা এই কাজ করেছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে”।
শুক্রবার মধ্যরাতে নুরনবীর মরদেহ ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারে পৌঁছলে নামে হাজারো মানুষ ঢল। স্বজনদের অভিযোগ, নিখোঁজের পর থেকেই যাত্রাবাড়ী থানা ও র্যাবের কাছে গেছেন তারা। তবে মেলেনি তেমন কোনো সহায়তা। এই অভিযোগ অস্বীকার পুলিশ বলছে, জড়িতদের ধরতে কাজ চলছে। এদিকে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।