পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে দুই শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় প্রকল্প পরিচালক, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, প্রকৌশলীসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে; গ্রেপ্তার হয়েছেন এক জন। নিহত এক শ্রমিকের চাচা বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে পাবনা সদর থানায় মামলা করেন বলে জানান ওই থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ। আসামিরা হলেন- প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার নাজিরুল হক, পরিচালক হারুনুর রশিদ, প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জিএম আজিজুর রহমান, আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মিজানুর রহমান, সাইট ইঞ্জিনিয়ার সুজাদৌল্লাহ এবং সাইট ইঞ্জিনিয়ার হোসাইন। এর মধ্যে হোসাইনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ‘মামলার পর রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে প্রকল্পের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. হোসাইনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বাকি আসামিদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।’ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল হলের বাইরের অংশে শ্রমিকেরা দড়ি ঝুলিয়ে প্লাস্টারের কাজ করছিলেন। এ সময় আকস্মিকভাবে দড়ি ছিঁড়ে নিচে পড়ে যান তিনজন নির্মাণশ্রমিক। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের স্থানীয়রা পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে পথে একজন মারা যান।
এ ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের চর মসুদেবপুর বাগানপাড়া এলাকার আনিসুর রহমানের ছেলে তুহিন ও রমনার গ্রাম ঘান্টি গেতাগাড়ী এলাকার মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে আসাদুল আলী। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে বার বার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। পাবিপ্রবিতে সর্বশেষ দুজনসহ এনিয়ে নির্মাণের সময় অন্তত ১৫ জন শ্রমিকের প্রাণ গেল। শ্রমিকদের মৃত্যুর কারণ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন দায় চাপালেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ওপর। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জি এম আজিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।