রাজধানীর কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের বাসায় ‘নির্যাতনে’ প্রাণ হারানো শিশু গৃহকর্মীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম হেনা (১০)। সে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এলাকার মৃত হক মিয়ার মেয়ে। তিন বছর আগে ময়মনসিংহে একটি ট্রেনিং করতে গিয়ে হেনাকে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ঢাকায় নিয়ে আসেন গৃহকর্ত্রী সাথী আক্তার পারভীন (ডলি)। সাথী আক্তার ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
রোববার (২৭ আগস্ট) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান,আমরা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গৃহকর্ত্রী সাথীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি শিশুটির পরিচয়। পরে আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে নিহত গৃহকর্মীর নাম হেনা বলে জানতে পারি। তিনি আরো জানান, মৃত শিশুটির ফুপুসহ
অন্যান্য স্বজনদের ডাকা হয়েছে। শিশু হেনার স্বজনরা ঢাকায় এসেছেন। তাদের কাছে শিশুর মরদহটি হস্তান্তর করা হবে বলেও তিনি জানান।
শিশু হেনার ফুপু লিপি আক্তার জানান, বাপ মা মরা এই এতিম নিষ্পাপ মেয়েটাকে কেন এভাবে হত্যা করা হলো ? আমি জঘন্য হত্যাকান্ডের বিচার চাই। আপনারা সাংবাদিক ভাই এখন আমাদের শেষ ভরসা। আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ আপনার একটু লেখেন এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ওই মহিলার আমরা ফাঁসি চাই। পরে বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে শিশু হেনার মরদেহটি ফুপু লিপি আক্তারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত শিশুর ফুপু জানিয়েছেন মরদেহটি তারা ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করবেন।
অপরদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নির্যাতনে গৃহকর্মী হেনা খুনে অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রীর অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যে কোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে। উল্লেখ্য কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের ৭৭ নম্বর ভবনের দ্বিতীয় তলায় ফ্ল্যাট ই-১ এ বাসিন্দা সাথী আক্তার পারভীন তার শিশু সন্তান আর ওই গৃহকর্মী হেনাকে নিয়ে বসবাস করতেন। গত তিন বছর ধরে হেনা ওই বাসায় কাজ করছিল। কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের ওই বাসায় প্রায়ই শিশু গৃহকর্মী নির্যাতন করা হতো বলে ধারণা পুলিশের। গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকালেও হেনাকে নির্যাতন করা হয়। শিশুটি মারা যাওয়ার পর মোবাইল ফোন ফেলে লাপাত্তা হয়ে যান সাথী।