হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মো. কামাল মিয়া নামে অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। বিমানবন্দরে বিভিন্ন সময় শিকারের আশায় যাত্রীবেশে ঘুরে বেড়াতেন কামাল। সুযোগ পেলেই যাত্রীদের অজ্ঞান করে লুটে নিতেন সর্বস্ব। কামালকে যাত্রীবেশে ঘুরে বেড়ানোর সময় আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক।
এয়ারপোর্ট এপিবিএন সূত্রে জানা যায়, ৩১ আগস্ট ও ৭ সেপ্টেম্বর অজ্ঞান পার্টির দুইটি অভিযোগ পাওয়া যায়। দুইটি অভিযোগেই একই ধরনের প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যায়। ৩০ আগস্ট ওমান থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে আসেন সুরুজ আলী। এরপর ২ নম্বর ক্যানোপি দিয়ে বের হওয়ার সময় যাত্রীবেশী কামালের সঙ্গে পরিচয় হয়। কৌশলে প্রতারক সুরুজের গন্তব্য জেনে নেয় কামাল। এরপর নিজেও একই দিকে যাবেন বলে এক সাথে যাওয়ার প্রস্তাব দেন অভিযুক্ত কামাল। এরপর সুরুজকে বিভিন্ন কথা বলে বহুতল কারপার্কিং এলাকায় নিয়ে গিয়ে গল্প করেন এবং আস্থা অর্জন করে যাত্রী সুরুজকে কামাল কৌশলে জুস পান করান । এতে ভুক্তভোগী জ্ঞান হারান। জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর তিনি বুঝতে পারেন অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সকল মালামাল হারিয়েছেন।
৭ সেপ্টেম্বর আরও এক প্রবাসীর অভিযোগ পায় এয়ারপোর্ট এপিবিএন। যাত্রী রিপন হোসেন সৌদি থেকে ৬ সেপ্টেম্বর শাহাজালাল বিমানবন্দরে আসেন। ঢাকা ফেরার পর অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন। তিনিও সাথে থাকা ৩ হাজার সৌদি রিয়াল, মোবাইলসহ সবকিছু হারান। এসব অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে এয়ারপোর্ট এপিবিএন। তদন্তে প্রতারক কামালকে অজ্ঞান পার্টির সদস্য হিসেবে শনাক্ত করে এপিবিএনের অপারেশন টিম। এরপর জাল বিছিয়ে অপেক্ষা করা হচ্ছিল কামালের। গতকাল মধ্যরাতে অভিযুক্ত কামালকে আবারও যাত্রীবেশেই বিমানবন্দরের ভেতরে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাকে গ্রেপ্তার করে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, আটক হওয়ার সময় নিজেকে যাত্রী দাবি করছিলেন কামাল। এ সময় যাত্রীর মতো ব্যাগ বহন করতে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের পর নিজের অপকর্মের কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয় কামাল। দুই যাত্রী রিপন ও সুরুজকে তিনি নিজে অজ্ঞান করে মালামাল নিয়ে সটকে পড়েছেন বলে স্বীকার করেন।