চট্টগ্রাম কর্ণফুলীর বড়উঠান ইউনিয়নের বিশ্বমুড়ায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও অনুসন্ধানের কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বড়উঠান ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৌলভী বাড়ী এলাকায় এ কাজের উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মো. মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব ঢাকা) চন্দন কুমার দে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যলয়ের আয়োজনে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (ঢাকা) মো: জাকির হোসেন, কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দুলাল মাহমুদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পালি ভাষা বিভাগের অধ্যাপক জিনবোধি ভিক্ষু, জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘরের কাম বিভাগ চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক এ কে এম সাইফুর রহমান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিশ্বমুড়ায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও অনুসন্ধানের কাজে এলাবাসীর গাছপালা কিংবা অবকাঠামোর কোনো ধরনের ক্ষতি হবে না। যদিও কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে, তাহলে তাদের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের পক্ষ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বক্তারা আরও বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের এখন অনুসন্ধান কাজ চলতেছে। অনুসন্ধান খনন কাজের পরে নিয়ম অনুযায়ী কি পাওয়া যায়, না পাওয়া যায় তার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে গত শুক্রবার সকালে বিশ্বমুড়ায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও অনুসন্ধানের কাজে এলাকাবাসীর ঘরবাড়ি উচ্ছেদ আতঙ্কের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য, গত ২ আগস্ট পণ্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের পাশাপাশি জাদুঘর স্থাপনের জন্য বড়উঠান ইউনিয়নের দেয়াঙ পাহাড়ের বিশ্বমুড়া নামক স্থান পরিদর্শন করেন দেশি-বিদেশি একটি পরিদর্শক দল। জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৫ জুন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্য ভাষা বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক আবেদনে প্রাচীন চৈত্যভূমি নামে খ্যাত আনোয়ারা উপজেলা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে জ্ঞানতীর্থ পণ্ডিত বিহার পীঠভূমিতে পণ্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া আবেদনে উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের দেয়াং পাহাড়ের দক্ষিণ অংশ এলাকায় বিলুপ্ত পণ্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। পাল আমলের শ্রেষ্ঠ র্কীতি ছিল এটি। পাল রাজা ধর্মপাল অষ্টম শতকের দ্বিতীয়ার্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ৮৪ সিদ্ধাচার্য বা বাংলা ভাষার আদি নির্দশন চর্যাপদের অনেক পণ্ডিত এ বিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন।