রাত ৯টার দিকে বৃষ্টির পানিতে মিরপুর যখন হাবুডুবু খাচ্ছিল। হাটুপানিতে তখন ছোট্ট একটি পা দেখা যাচ্ছিল। এসময় কালো প্যান্ট পড়ে খালি গায়ে এসে এক ব্যক্তি তার পা ধরে টেনে তুললেন।ডান পা ধরে টেনে তুলতেই দেখা গেল আনুমানিক ৬/৭ মাসের একটি শিশু। পড়নে নীল হাফপ্যান্ট ও সাদা গেঞ্জি। মুহূর্তেই নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় পা টেনে তোলা নিষ্পাপ শিশুটির ছবি। যা দেখে স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা দেশ। আঁতকে উঠেন অনেকেই। কেউ সমালোচনা করছেন ঢাকার দুই মেয়রের, আবার কেউ দোষ দিচ্ছেন নিয়তির।
শিশুটির নাম হোসাইন।মা মুক্তা বেগম,বাবা মিজানুর ও ৭ বছরের বোন লিমার সাথে নানার বাড়ি থেকে ফিরছিলেন নিজ বাসায়।
কিন্তু ঘরে আর পৌঁছাতে পারেনি তারা। চিড়িয়াখানার শিয়ালবাড়ী ও মিরপুর কমার্স কলেজের মাঝামাঝি এলাকায় রাস্তায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান শিশুর মা,বাবা ও বোন।
তিনজনকে পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে ছটফট করতে দেখে সাহায্যের জন্য ছুটে যান এলাকার তরুণ মোহাম্মাদ অনিক। কিন্তু বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান তিনিও। তবে অলৌকিক ভাবে বেঁচে আছে মুক্তা-মিজানুর দম্পতির ৭ মাসের শিশু হোসাইন। বাবার কোল থেকে পড়ে শিশুটি পানিতে ডুবতে ডুবতে ভেসে যাওয়ার সময় টেনে তোলেন এক তরুণ। পরে তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজন মিলে গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে নিয়ে দ্রুত ভর্তি করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
আজ সকালে ঢাকা মেডিকেলে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় তৃতীয় লিঙ্গের বৃষ্টি নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি জানান শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা তাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি। ক্ষণিকের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায় সেই ভিডিওটি যেখানে দেখা যাচ্ছিল নারী শিশুসহ চারজন পানিতে পড়ে আছে। বিদ্যুতায়িত হবার ভয়ে কেউ তাদের রক্ষার্থে এগিয়ে যাচ্ছিল না। গোটা জাতি যেন এই দৃশ্যটি দেখে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই ঘটনায় আহত আরো পাঁচজনকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।