দিনে না থাকলেও রাতের ঢাকার প্রধান সড়কে অবাধে চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। রাত ৯টার পর প্রায় সব সড়কেই শুরু হয় এর দৌরাত্ম্য, চলে সকাল পর্যন্ত। আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরও নিয়ন্ত্রণহীন এই চলাচলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। চালকেরা বলছেন, গণপরিবহন সংকট ও যানজট না থাকায় সড়কে নামেন তারা, কম থাকে পুলিশের নজরদারিও। আর পুলিশ বলছে, চোখ ফাঁকি দিয়েই চালছে এসব অবৈধ বাহন।
২০১৪ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পরে ২০১৭ সালে ফের আরেক দফা বন্ধের নির্দেশনা আসে। ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর অটোরিকশা বন্ধ ও আমদানি নিষিদ্ধ করে আবারও নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। এরপরও দিন দিন বাড়ছে এই ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দিনের বেলা মূল সড়কে ওঠে না এই রিকশাগুলো। তবে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মূল সড়কে চলে আসে চালকেরা। রাজধানীর ওয়ারী,যাত্রাবাড়ী, সদরঘাট, মালিবাগ, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বছিলা, খিলগাঁওসহ সব সড়কেই এসব রিকশা চলাচল করে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাটারিচালিত রিকশা চালক জানান, বাড়তি আয়ের আশায় নিয়ম ভাঙছেন তারা। রাতে গণপরিবহন কমে যাওয়ায় বাড়ে চাহিদা। এছাড়া ট্রাফিক জ্যাম না থাকায় পুলিশের চোখ এড়ানো হয় সহজ। আরেক ব্যাটারিচালিত রিকশা চালক বলেন, রাতে মেইন রাস্তায় উঠলে সহজে দূরের ভাড়া পাওয়া যায়। এতে করে ইনকাম বেশি হয়। তবে যাত্রীরা জানিয়েছেন মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে গণপরিবহনের সংকটে কম দূরত্বে চলাচলের জন্যই এতে উঠছেন তারা। আবার কেউ বলছেন, এই রিকশায় চলাচলে সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি।
মহাখালীর বাসিন্দা সামছুর বলেন, রাতে গণপরিবহন না থাকায় এই রিকশার চাহিদা বেশি। তবে এই রিকশা বেশ ভয়ানক, যার কারণে দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। তারপরও যানবাহন না থাকায় উঠতে হয়। মহাখালীতে দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. মাসুদ রানা বলেন, নিয়ম দিন-রাত সব সময়ের জন্য একই। রাতে যারা ব্যাটারির রিকশা চালাচ্ছেন তারা পুলিশরে চোখ ফাঁকি দিয়েই চালাচ্ছেন। নিবন্ধনহীন এসব বাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। এদিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষের মৃত্যু হয় এর ২০ শতাংশই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায়। প্যাডেলের রিকশার চেয়ে ব্যাটারির রিকশার গতিও বেপরোয়া। এতে রাতের ঢাকার সড়কে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা।