রামপুরা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ ফরিদ(২৬) ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে রামপুরা থানা পুলিশ। রোববার (১ অক্টোবর) রাত পৌনে ১২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামপুরা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কাউন্টার টেরোরিজম থেকে আমাকে ফোন করে জানানো হয় রামপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। পরে আমরা দ্রুত তার বাসার ঠিকানা ম্যানেজ করে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করি। মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে তাকে বনশ্রী একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমানে তাকে ঢাকা মেডিকেলের ২০০ নম্বর ওয়ার্ডের ভর্তি দেওয়া হয়েছে এবং এক্স-1 বেডে চিকিৎসাধীন। রোগীর বর্তমান অবস্থা কি জানতে চাইলে চিকিৎসক জানান যে, তাহার অবস্থা ভালো আছে।
তিনি আরও জানান প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে স্ত্রীর সাথে বেশ কিছুদিন ধরেই তার মনোমালিন্য চলছিল। এই ঘটনার জেরে হয়তো সে এ কাজটি করেছে।বিস্তারিত পরে জানানো হবে। এদিকে খালিদ সাইফুল্লাহ ফরিদের ফেসবুকে দেখা যায়, তিনি একঘণ্টা আগে ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এর ২ ঘণ্টা আগে তিনি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তাতে তিন লেখেন, ‘আমি আর ফিরব না তোমাদের ঐ অভিনয়ের শহরে, চলে যাচ্ছি অনেক দূরে…’।
উল্লেখ্য খালিদ সাইফুল্লাহ গত ১৩ মার্চ রাজধানীর ফরাজী হাসপাতালের পুষ্টিবিদ ডাক্তার রুবাইয়া রীতিকে অনেকটা লুকিয়েই বিয়ে করেন।কেননা, ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় নতুন কমিটিতে আবারও পদপ্রত্যাশী ছিলেন তিনি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো বিবাহিত ছাত্র ছাত্রলীগের কমিটিতে জায়গা পায় না, তাই বিয়ের বিষয়টি কখনোই সামনে আনতে চাননি তিনি।এর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে গর্ভপাতের জন্য বারবার রীতিকে শাসাতেন সাইফুল্লাহ।
সাইফুল্লাহর স্ত্রী রীতি জানান, ওই সময় ৫ কোটি টাকার একটি জায়গা বায়না করতে সাইফুল্লাহর ১ কোটি টাকা প্রয়োজন ছিল। এ জন্য রীতিকে চাপ দিতে থাকেন তিনি। এ নিয়ে শুক্রবার (২১ জুলাই) বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে সাইফুল্লাহ রীতির পেটে আঘাত করেন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায় রীতির গর্ভের সন্তান মারা গেছে।তার আঘাতে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে। এটা অবশ্যই হত্যা। আমি কখনোই তাকে মাফ করব না।
এ ঘটনায় শনিবার (২২ জুলাই) ভুক্তভোগী রীতি খিলগাঁও থানায় নারী নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার মামলা করলে রোববার (২৩ জুলাই) খালিদ সাইফুল্লাহকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। পরে জামিনে বের হন তিনি।