দুই বছরেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি ঢাকা নগর পরিবহন। এখনও আটকে আছে পাইলট প্রকল্পেই। আর্থিক ক্ষতির অজুহাতে সরে গেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। নগর পরিবহনের রুটে অন্য কোম্পানির বাস বন্ধ না করতে পারা ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) ব্যর্থতা, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সংকট নিরসনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) বাস বাড়ানোর তাগিদ তাদের।
রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানো ও যাত্রী হয়রানি কমানোর লক্ষ্যে ২০২১ সালে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয় বাস রুট রেশনালাইজেশন। কিন্তু চালু হওয়া তিন রুটেই যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে নগর পরিবহন। দেড়শ বাস চলার কথা থাকলেও কাগজে-কলমে তা নেমে এসেছে ৮৫ তে। বাস কমার কারণ হিসেবে আর্থিক ক্ষতি ও কর্তৃপক্ষের দায়সারা মনোভাবকে দায়ী করছে বেসরকারি কোম্পানিগুলো। আর্থিক ক্ষতির কথা স্বীকার করলেও অবহেলার অভিযোগ নাকচ করেছে বিআরটিসি।
এ নিয়ে ট্রান্স সিলভা পরিবহনের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম খোকন জানান, ‘পরিবহনের কাউন্টার খরচ ও টিকিট খরচটা যখন থেকে বিআরটিসি বহন করছে, তখন থেকে আমাদের লোকসানটা কমেছে, তবে লোকসান আগে বেশি হত।’ এ প্রসঙ্গে বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ‘লাভ-লোকসানের হিসেবটাই সবসময় মুখ্য নয়, সেবাটাই মুখ্য। কিছু রুটে লাভ কম হয়, কিছু রুটে বেশি। আমরা এভাবে লাভ-লোকসানের একটা ভারসাম্য রাখতে পারি। তবে বেসরকারি পরিবহন ব্যবস্থার তো সে সুযোগটা নেই।’
পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিনটি রুটে অন্য কোম্পানির বাস এখনও বন্ধ হয়নি। তবে অন্য কোম্পানির বাস বন্ধের প্রক্রিয়া চলছে বলে দাবি জানিয়েছে ডিটিসিএ। ডিটিসিএ প্রকল্প পরিচালক ধ্রুব আলম এ নিয়ে প্রশ্ন করলে জানান, প্রক্রিয়া সব সময়ই অব্যাহত থাকে। বিশেষজ্ঞ ড. আদিল মুহাম্মাদ খান বলছেন, পরিবহন ব্যবস্থার মুল বিষয়টি সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলেই ভাল হয়। বেসরকারি পরিবহনগুলো কে এ ক্ষেত্রে অন্য লেভেলে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি। চলতি বছরের মধ্যেই ঢাকা নগর পরিবহনের বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে বিদ্যুৎ-চালিত ১০০টি নতুন বাস। তবে বাস রুট রেশনালাইজেশন তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে প্রয়োজন অনুমোদনহীন বাস অপসারণ ও পরিকল্পনার যথাযথ প্রয়োগ।