কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে বন্দুকধারীরা। নারী-পুরুষ আলাদা করে পুরুষদের টার্গেট করার অভিযোগ উঠেছে। প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬ জন, আহত আরও অনেকে। ভয়াবহ হামলার পর প্রধানমন্ত্রী মোদী সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও জানালেন নিন্দা ও সংহতি।
ভারত শাসিত কাশ্মীরের অনিন্দ্যসুন্দর পর্যটন কেন্দ্র পহেলগামে আজ পরিণত হয়েছে মৃত্যুপুরীতে। মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, পহেলগামের বৈসারণ এলাকায় ঘন জঙ্গল ঘেঁষা একটি জায়গায় আকস্মিকভাবে হামলা চালায় একদল বন্দুকধারী। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য মতে, হামলাকারীরা নারী-পুরুষ আলাদা করে বিশেষভাবে পুরুষদের লক্ষ্য করেই নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে এখন পর্যন্ত ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই পুরুষ। আহত হয়েছেন আরও অনেকে, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। একজন নারী বেঁচে যাওয়া পর্যটক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে জানান, তার স্বামী মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তিনি বলেন, “ওরা আমাদের আলাদা করে দিল। পুরুষদের টার্গেট করছিল, আমাকে কিছু বলেনি।”
বন্দুকধারীরা কাছের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে হঠাৎ গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। কখনও একজন একজন করে, আবার কখনও দলবদ্ধভাবে গুলি চালায় তারা। হামলার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সৌদি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরেন। তিনি কড়া ভাষায় বলেন, “এই বর্বরতার কোনো ক্ষমা নেই। অপরাধীরা শাস্তি পেতেই হবে।” মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টেলিফোনে মোদীর সাথে কথা বলেন এবং ভারতের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ একে সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ হামলা বলে উল্লেখ করেন।
সাধারণত পর্যটকদের উপর এমন সন্ত্রাসী হামলা কাশ্মীরে বিরল হলেও, এই ঘটনা ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। কূটনৈতিক স্তরে যেমন আলোচনা চলছে, তেমনি দেশের ভেতরেও জনগণের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। এখন দেখার বিষয়, তদন্ত কত দ্রুত ও কার্যকরভাবে সম্পন্ন হয় এবং দোষীরা আদৌ শাস্তি পায় কি না।
Comments: