বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) এবং দেশের ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে গণশুনানি শুরু করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব এ বছরের শুরুতে পেট্রোবাংলা পাইকারি গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। এই প্রস্তাবের পর, সরকারি ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি, যার মধ্যে তিতাস গ্যাস কোম্পানি রয়েছে, খুচরা গ্রাহকদের জন্য গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আবেদন করে।
শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করা প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া, ক্যাপটিভ গ্যাসের দাম ৩১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাবও উত্থাপন করা হয়েছে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর যুক্তি পেট্রোবাংলা তাদের প্রস্তাবে বলেছে, এলএনজি (লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) আমদানি করতে সরকারকে বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হবে, যদি গ্যাসের দাম না বাড়ানো হয়। বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট, যার অর্ধেক আসে দেশি গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে। বাকি ২৫ শতাংশ এলএনজি আমদানি করা হয়।
বিইআরসির গণশুনানি বাংলামোটরের বিয়াম অডিটোরিয়ামে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বিইআরসি এ বিষয়ে গণশুনানি শুরু করেছে। পেট্রোবাংলা প্রস্তাবের ভিত্তিতে বিইআরসি বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আরও প্রস্তাব চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে এবং তারা এসব প্রস্তাব এখন মূল্যায়ন করছে। পেট্রোবাংলার প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রতি ঘনমিটার এলএনজির বর্তমান আমদানি মূল্য ৬৫ টাকা ৭০ পয়সা হলেও, ভ্যাট, ট্যাক্স এবং অন্যান্য চার্জ যোগ করে এর মূল্য দাঁড়াচ্ছে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা। এই কারণে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া, দেশি গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায়, শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুতে তার প্রভাব পড়েছে। ভবিষ্যতে এলএনজি আমদানির পরিমাণ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব একদিকে সরকারের জন্য প্রয়োজনীয় কিন্তু অন্যদিকে দেশের শিল্প খাতে নতুন চাপ তৈরি করতে পারে। বিইআরসি এই প্রস্তাবগুলো যাচাই করে তার সিদ্ধান্ত জানাবে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: