১৯৯৯ সালের নভেম্বরের এক শীতের সকালে, রাত ২টায় লন্ডন আইয়ের উপর থেকে নয়জন অ্যাবসেইলার নেমে আসার দৃশ্য ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আজও, এই কীর্তির পেছনের প্রকৌশল এবং চ্যালেঞ্জগুলো স্মরণ করা হয়। লন্ডন আই ২৫ বছর পূর্ণ করল, যা প্রথমে মাত্র পাঁচ বছরের জন্য স্থাপিত হওয়ার কথা ছিল। ব্রেক্সিট ও বর্তমান লাল ফিতার কড়াকড়ির কারণে, আজকের দিনে এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
১৯৯৯ সালে লন্ডন আই স্থাপনের জন্য সাহসী প্রকৌশল পরিকল্পনা নেওয়া হয়। মেসের নয়জন স্বেচ্ছাসেবক অ্যাবসেইলিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। টেমস নদীর উপর তৈরি এই দর্শনীয় চাকা একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্প ছিল। ক্যাপসুল তৈরি হয়েছিল ফ্রান্সে, স্টিল চেক প্রজাতন্ত্রে এবং কাচের কাঠামো ইতালিতে। লাল ফিতা ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এমন প্রকল্প ভবিষ্যতে কঠিন হয়ে উঠতে পারে। ১৯৯৯ সালে একাধিক প্রকৌশল চ্যালেঞ্জ ও ব্যর্থতা সত্ত্বেও, লন্ডন আই সফলভাবে দাঁড়িয়ে থাকে।
লন্ডন আই প্রথমে অনুভূমিক অবস্থান থেকে খাড়া করা হয়েছিল, যা বড় ধরনের প্রকৌশল চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছিল। রাজনীতিবিদ ও সমালোচকরা এটি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন, বিশেষ করে লর্ড সেন্ট জন অফ ফসলি ও জেরেমি করবিন। ৩২টি ক্যাপসুল তৈরি হয়েছিল ফ্রান্সে, যা একত্রিত করার জন্য আন্তর্জাতিক দক্ষতা কাজে লাগানো হয়। ১৯৯৮ সালে মিতসুবিশি প্রকল্প ছেড়ে দেওয়ার পর নতুন কৌশল গ্রহণ করতে হয়। টেমস নদীর পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ, যেমন ইল ও চিংড়ির প্রজনন এলাকা রক্ষার জন্য বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
লন্ডন আই শুধুমাত্র একটি পর্যবেক্ষণ চাকা নয়, এটি ব্রিটেনের প্রকৌশল দক্ষতার প্রতীক। ২৫ বছর পরও এটি দক্ষিণ তীরে গর্বের সাথে দাঁড়িয়ে আছে এবং ব্রিটেনের সবচেয়ে বেশি পরিদর্শিত আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প কতটা সম্ভবপর, তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রশ্ন তুলছেন, তবে লন্ডন আইয়ের কীর্তি ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: