ইউনাইট দ্য ইউনিয়নের একটি সাম্প্রতিক জরিপে উঠে এসেছে যে, যুক্তরাজ্যে প্রতি চারজন নারীর মধ্যে একজন কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। জরিপে ৩ লাখ নারীর অংশগ্রহণ, ২৮ শতাংশকে দেখানো হয়েছে পর্নোগ্রাফি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘটনা গোপন রাখতে বাধ্য হয়েছেন কর্মীরা।
যুক্তরাজ্যের প্রধান ট্রেড ইউনিয়ন ইউনাইট দ্য ইউনিয়ন ৩ লাখ নারী কর্মীর উপর একটি জরিপ চালিয়ে ভয়ঙ্কর চিত্র তুলে এনেছে। জরিপ অনুযায়ী, ২৮ শতাংশ নারী জানিয়েছেন যে তাদের ম্যানেজার, সহকর্মী বা গ্রাহক তাদের পর্নোগ্রাফি দেখিয়েছেন। এছাড়া ৪৩ শতাংশ নারী অনুপযুক্তভাবে স্পর্শের শিকার হয়েছেন, এবং প্রতি চারজনে একজন নারীকর্মী কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের অভিজ্ঞতা পেয়েছেন।
বেশিরভাগ ঘটনার ক্ষেত্রেই নারীরা ভয়, অবিশ্বাস এবং চাকরি হারানোর আশঙ্কায় অভিযোগ করেননি। যারা অভিযোগ করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই উল্টো হয়রানির শিকার হয়েছেন— কাউকে মিথ্যা বলার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে, আবার কাউকে অপরাধী থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
জরিপে অংশগ্রহণকারী নারী কর্মীরা কাজ করছেন নির্মাণ, পরিবহন, খাদ্য ও পানীয়, গুদামজাতকরণ, সরবরাহ ব্যবস্থা, ট্রাকিংসহ ১৯টি ভিন্ন খাতে। একজন নারী নির্মাণকর্মী জানিয়েছেন, তার ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্য একজন খাদ্য খাতে কর্মরত নারী জানান, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে যৌন মন্তব্য সহ্য করেও কোন ব্যবস্থা পাননি।
ইউনাইটের প্রধান শ্যারন গ্রাহাম বলেন, “এই ফলাফল আমাদের হতাশ করেছে। কর্মক্ষেত্রে কেউই যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার কথা নয়। প্রত্যেক কর্মীর নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।”
অক্টোবর ২০২৪ থেকে যুক্তরাজ্যে নিয়োগকর্তারা আইনত বাধ্য হয়েছেন কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি রোধে ব্যবস্থা নিতে। তবে, জরিপ বলছে ৩৪ শতাংশ নারী মনে করেন না যে তাদের কর্মস্থলে এই ধরনের আচরণের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি কার্যকর রয়েছে।
ইউনাইটের এই জরিপ কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা স্পষ্ট করে। আইনি কাঠামো শক্তিশালী হলেও বাস্তবায়নে এখনও ঘাটতি রয়ে গেছে। কর্মস্থলে নিরাপত্তা এবং সম্মানের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার, নিয়োগকর্তা এবং সমাজের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: