প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া সহ একাধিক জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমে ‘‘মৌলভীবাজার শহরের ফুটপাত নিয়ে অবৈধ দখল বাণিজ্য, নির্বীকার প্রশাসন‘‘ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার তিন দিনের মাথায় পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে মৌলভীবাজার শহরের ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন। যানজট নিরসন আর সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য ফুটপাত নিরাপদ রাখতে এমন উচ্ছেদ অভিযান নিয়মিত চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করেন শহরের সাথারণ মানুষ।
বুধবার (১২ই মার্চ) দুপুর দেড়টার পর থেকে পৌরসভার প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বুলবুল আহমেদ এর নেতৃত্বে শহরের পশ্চিমবাজার এলাকা থেকে শুরু হয় দখল হওয়া ফুটপাতে উচ্ছেদ অভিযান। অভিযানে পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এসময় ফুটপাত দখল করে রাখার দায়ে ব্যবসায়ীদের কঠোরভাবে সতর্ক করে দেয়ার পাশাপাশি সেখানে উচ্ছেদ চালানো হয়। তবে অভিযানের খবরে আগে থেকেই ফুটপাত দখলকারীরা দখল ছেড়ে তাদের নানান পণ্য সরিয়ে ফেলে।
অভিযান পরিচালনায় থাকা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সোহাগ মিলু জানান, অভিযানে মোট ৮ জনকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এখন থেকে ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
জানা যায়, শহরের প্রধান সড়কগুলোর দু‘পাশের ফুটপাতের সিংহভাগই দখল করে চলছে অবৈধ বাণিজ্য। ভবন কিংবা মার্কেট মালিকরাও নিজেদের মালিকানায় থাকার কারণে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে সেখানে ছোট-খাটো অস্থায়ী দোকান ভাড়া দিয়ে পকেট ভারি করছেন বলে জানা গেছে। এমন দৃশ্য শহরের পশ্চিমবাজার,পুরাতন হাসপাতাল সড়ক,সাইফুর রহমান সড়ক, আদালত সড়ক, শমসেরনগর সড়ক, টিসি মার্কেট এলাকা, কুসুমভাগ, বেড়ীরপার,সদর হাসপাতাল এলাকা ও শ্রীমঙ্গল সড়ক সহ শহরের প্রাণকেন্দ্রগুলোতে অহরহ চোঁখে পড়ছে। পথচারী চলাচলের বৈধ ফুটপাতটি অবৈধ দখলের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় পথচারীদের। মাসের পর মাস জুড়ে শহরের বেশিরভাগ ফুটপাত দখলের কারণে সড়কগুলোতে যানজট লেগেই আছে। বিষয়টি নিয়ে যাদের মাথা ব্যথা থাকার কথা সেই পৌর কর্তৃপক্ষও নীর্বিকার। বরং অবৈধ ফুটপাত দখলকারীদেও উচ্ছেদ না করে প্রতিদিন পৌরসভার নামেই আদায় হচ্ছে অর্থ। নামে মাত্র রসিদ দিয়ে রাস্তার উপড় দাঁড়িয়ে থাকা ভ্যান থেকে আদায় করা হচ্ছে টাকা। সাবেক মেয়র ফজলুর রহমান এর সময়কাল থেকেই এভাবে টাকা উত্তোলন হয়ে আসছে। তবে ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী ফেসিবাদ সরকারের পতন হলে কিছু দিন অর্থ আদায় বন্ধ ছিলো। তবে ফের গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে আবার শুরু হয় ফুটপাতের অবৈধ দোকান থেকে টাকা আদায়। যা বর্তমানেও চলমান রয়েছে। টাকা আদায়ের দ্বায়িত্বে থাকা পৌরসভার প্রতিনিধি নাজমুল ইসলাম নিজেই জানিয়েছেন শুধুমাত্র নভেম্বর মাসে কুসুমভাগ এলাকার ফুটপাত থেকে আদায় করা হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
উল্লেখ্য,পর্যটন অধ্যুসিত জেলা শহর মৌলভীবাজার নানান কারণে গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর হিসেবে দেশজুড়ে পরিচিত । ১০.৩৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ-গ্রেড এর এই শহরটিতে ফুটপাত রয়েছে ৬.৫০ কিলোমিটার। আর জনসংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কাছাকাছি। যে আবাসস্থল ছিল শান্ত মনোমুগ্ধকর পরিবেশেরমনমাতানো নৈশরিক শহর।
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
Comments: