• ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২৩ মাঘ ১৪৩১
  • বাংলাদেশ
    যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান

    image

    ঢাকা অফিস
    আফগানিস্তানের কিছু মানুষকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেই প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ। সোমবার (১৬ আগস্ট) রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের রাষ্ট্রদূতের কাছে প্রস্তাব দেয়। পরে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত কিছু আফগান নাগরিককে সাময়িকভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার অনুরোধ জানায়। যুক্তরাষ্ট্র এ সময় জানায় তারা বাংলাদেশসহ আরও কিছু বন্ধু দেশকে এ অনুরোধ জানিয়েছে।
    পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা জানতে চেয়েছিলাম কোন কোন দেশকে তারা এ অনুরোধ জানিয়েছে। সেই সঙ্গে আমরা জানতে চেয়েছিলাম কত আফগান নাগরিককে কত দিনের জন্য রাখতে হবে। কিন্তু এ বিষয়ে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।
    আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ এমনিতেই ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে সমস্যায় আছে। নতুন করে কোনো দেশের লোকজনকে আশ্রয় দেওয়ার কোনো সুযোগ বাংলাদেশের নেই। তাই আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছি।
    এদিকে আফগানদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারলে আফগানিস্তানের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চীন তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে; এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চাওয়া হলে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিকে, ওয়াশিংটনে তালেবানবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে।
    রাজধানী কাবুল দখলসহ দেশজুড়ে তালেবান গোষ্ঠীর তৎপরতার মধ্যেই স্থানীয় সময় রোববার (১৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক ঘোষণায় বলেন, ভবিষ্যতের যে আফগান সরকার জনগণের মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখবে এবং সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেবে না, ওয়াশিংটন তাদের স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত।
    সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। সেনা প্রত্যাহার করতে আফগান তালেবানের সঙ্গে চুক্তি সই হয় ওই সময়। তবে জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার পুরোপুরি শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয় সেনা প্রত্যাহার। এর পরই তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে।
    এদিকে, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের প্রতিবাদে হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ’ মানুষ। আফগানিস্তানে চলমান সহিংস পরিস্থিতির জন্য বাইডেন প্রশাসনকে দায়ী করেন বিক্ষোভকারীরা।
    এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিসহ দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। রক্তপাত এড়াতেই দেশ ত্যাগের দাবি করেন তারা। প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের দখলও এখন তালেবানের হাতে। তবে শান্তিপূর্ণভাবেই ক্ষমতা গ্রহণ করতে চায় তালেবান। তারা ঘোষণা দিয়েছে, আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষ।
    আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চাইলেও, বিদেশি হস্তক্ষেপ রুখে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে তালেবান। জঙ্গি গোষ্ঠীটির শীর্ষ এক নেতা জানিয়েছেন, দেশটি এখন স্বাধীন হলেও চ্যালেঞ্জের শুরু মাত্র।
    উত্তপ্ত আফগানিস্তানের কাবুল থেকে এরই মধ্যে নিজেদের দূতাবাস থেকে কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা, ইতালি, নেপালসহ প্রায় ৬০টি দেশ। এরইমধ্যে কয়েকশ’ আফগান নাগরিক ভারতে পৌঁছেছে। এখনো যারা আটকে আছে তাদের জরুরি ভিত্তিতে সরিয়ে নিতে তৎপরতা অব্যাহত আছে। এদিকে, তালেবানের দাপটের মুখে মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করলেও ভিয়েতনামের সাইগন থেকে পালানোর মতো পরিস্থিতি হয়নি বলে দাবি করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
    তালেবান সরকারের স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। জঙ্গিদের হাতে দেশটির ক্ষমতা যাওয়ায় মর্মাহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

    ভিডিও
    Comments:
    Sponsered Ad
    Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement

    loading