মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয়দের হাতে খুন হওয়া বাংলাদেশি কৃষক আহাদ আলীর পরিবার ভয়ে এখনো নিজ বাড়িতে ফিরছে না। আহাদ আলী খুনের ঘটনায় কান্না থামছে না পরিবারের। এ হত্যা কান্ডের ঘটনার পর থেকে এখনো আতংকে রয়েছেন তার স্ত্রী-সন্তনরা।
পরিবারের সদস্যরা ভয়ে সীমান্ত ঘেষা বাড়িতে ফিরছেন না কেউ। দেশে থাকা কোনো আসামি এখনো গ্রেফতার না হওয়ায় আরো আতংক বিরাজ করছে তাদের মধ্যে। ভারতীয় এবং বাংলাদেশি খুনিদের ভয়ে সীমান্তবর্তী নিঝুম বাড়িটি ছেড়ে তারা এখন আশ্রয় নিয়েছে মেয়ের জামাতার বাড়িতে। গত ২৬শে জানুয়ারি দুপুরে কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী কর্মধা ইউনিয়নের দশটেকি (নতুন বস্তি) এওলাছড়া এলাকায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উনকুটি জেলার ইরানী থানার পূর্ব ইরানী গ্রাম থেকে হায়দার আলীর নেতৃত্বে ৫-৬ জনের একটি দল অবৈধভাবে বাংলাদেশ সীমান্তের নো-মেন্স ল্যান্ডে অনুপ্রবেশ করে রাম দা ও লাঠিশোঠা দিয়ে কৃষক আহাদ আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে এই মর্মান্তিক কান্ড ঘটায়। ঘটনার পর থেকে আহাদ আলীর স্ত্রী-সস্তানরা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
আহাদ আলীর স্ত্রী জমিরুন নেছা বলেন, ভারতীয় আসামিরা শুনেছি এখনো তাদের বাড়িতে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে। এবং ওইখান থেকে আমাদেরকে নানাভাবে হুমকি দামকি দিচ্ছে। যেহেতু কাটাতার টপকিয়ে তারা বাংলাদেশে এসে আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে এখন যদি আমরা বাড়ি ফিরি তাহলে ওই আসামিরা রাতের আধাঁরে এসে আবারও আমাদের ওপর হামলা চালাতে পারে তাই ভয়ে কেউই বাড়ি ফিরছি না।
আহাদ আলীর মেয়ে অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া রাছনা বেগম বলেন, বাবার মৃত্যুর শোক এখনো আমরা ভুলতে পারছি না, সবাই এখনো নানা আতঙ্কে রয়েছি। বাবা মারা যাওয়ার ১০ দিন অতিবাহিত হলেও দেশে থাকা আসামির মধ্যে কেউ এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমরা আতঙ্কে উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছি। কুলাউড়া থানার ওসি মো: গোলাম আপছার বলেন, আসামি আটক করতে আমরা বেশ কয়েকবার পাহাড়ি অঞ্চল হানা দিয়েছি। দেশে থাকা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এ ব্যাপারে বিজিবি শ্রীমঙ্গল সেক্টর কমান্ডার লে: কর্নেল জাকারিয়া জানান, ওই পরিবার আতংকের বিষয়ে আমরা অবগত নই। তবে সীমান্ত এলাকায় আমাদের বিজিবির টহল অব্যাহত রয়েছে। ভারতে থাকা আসামিদের গ্রেফতারের ব্যাপারে ইতোমধ্যে আমরা পতাকা বৈঠক করে চিঠি দিয়েছি। উল্লেখ্য; বাংলাদেশ অংশে আহাদ আলীর শ্বশুরের কিছু পতিত জায়গা রয়েছে সেগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন জামাতা আহাদ। মূলত ওই জায়গাকে কেন্দ্র করে এ হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
Comments: