সমুদ্র থেকে শুরু করে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ পর্যন্ত ৮৪ দিনের অবিশ্বাস্য যাত্রা! আজ ১৯ মে, বাংলাদেশি পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল ৮৪ দিনের দীর্ঘ অভিযানে সফলভাবে জয় করেছেন বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট এভারেস্ট।
তিনি হলেন বাংলাদেশের সপ্তম পর্বতারোহী যিনি এভারেস্টের শিখরে পৌঁছালেন।
শাকিল তার যাত্রার নাম দিয়েছেন ‘সি টু সামিট’। এটি শুরু হয়েছিল কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকত থেকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি।
শাকিল বাংলাদেশের একমাত্র পর্বতারোহী যিনি সি-লেভেল থেকে হেঁটে এভারেস্ট বেজক্যাম্প ও শিখরে পৌঁছেছেন। কক্সবাজার থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পঞ্চগড় হয়ে তিনি ৩১ মার্চ নেপালে পৌঁছান। এরপর ১,৪০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ২৯ এপ্রিল তিনি পৌঁছান এভারেস্ট বেজক্যাম্পে। ৬ মে ক্যাম্প-৩ পর্যন্ত গিয়ে আবার বেজক্যাম্পে ফিরে আসেন রোটেশনের জন্য। এরপর ১৬ মে ক্যাম্প-২, ১৭ মে ক্যাম্প-৩ এবং ১৮ মে ক্যাম্প-৪ পৌঁছান। অবশেষে ১৯ মে দুপুর ২টা ১০ মিনিটে তিনি শিখরে পা রাখেন এবং ক্যাম্প-৪ এ নিরাপদে ফিরে আসেন। অভিযান চলাকালীন নেটওয়ার্ক সমস্যা থাকায় কিছু তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।
‘সি টু সামিট’ ধারণাটি ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলীয় পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ-এর প্রজেক্ট থেকে অনুপ্রাণিত। ইকরামুল হাসান শাকিল ভারতের নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তিনি এর আগে ‘হিমলুং’, ‘ডোলমা খাং’, ‘দ্রৌপদী কা ডান্ডা-২’ সহ একাধিক শৃঙ্গে সফল অভিযান চালিয়েছেন। ২০২৩ সালে তিনি ‘গ্রেট হিমালয়া ট্রেইল’ সফলভাবে অতিক্রম করে আলোচনায় আসেন।
এই দুঃসাহসিক অভিযানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিল প্রাণ। সহযোগী হিসেবে ছিল UNDP, মিস্টার নুডলস, সিস্টেমা টুথব্রাশ এবং নেপালের মাকলু-ই-ট্রেডার্স।
ইকরামুল হাসান শাকিলের এই অসাধারণ সাফল্য শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং বাংলাদেশের পর্বতারোহণ ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা। সাগর থেকে শিখর—এই যাত্রা বাংলাদেশি তরুণদের জন্য এক অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে থাকবে।
অনলাইন ডেস্ক
ভিডিও
Comments: