সীমান্তজুড়ে ঠেলে পাঠানোর উদ্বেগজনক প্রবণতা, সিলেটসহ ১৯টি জেলায় ১,৯০০ জনকে পুশইন করেছে ভারত। আইন, মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক নিয়মের তোয়াক্কা না করে ভারতের পুশইন অব্যাহত—সর্বশেষ সিলেট সীমান্তে ফেরত পাঠানো হয়েছে ২৫০ জন
সীমান্তজুড়ে অব্যাহত রয়েছে ভারতের পুশইন কার্যক্রম। শুধুমাত্র সিলেট সীমান্তেই ২৫০ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে, আর সারাদেশে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,৯০১ জনে। শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ মে থেকে শুরু হওয়া পুশইন কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ইতিহাসে নজিরবিহীন।
বিশেষ উদ্বেগের বিষয়, এই পুশইন কার্যক্রমে রোহিঙ্গারাও রয়েছে—সংখ্যায় দুই শতাধিক। যাদের মধ্যে অনেকে ইউএনএইচসিআর নিবন্ধিত এবং কারো শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পর্যন্ত দেখা গেছে। এই অবৈধ অনুপ্রবেশ আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলেই মন্তব্য করছেন বিশ্লেষকরা।
সর্বাধিক পুশইন হয়েছে মৌলভীবাজার সীমান্তে (৫০২ জন), এরপর সিলেট (২৫০), খাগড়াছড়ি (১৬০), লালমনিরহাট (১২৮), পঞ্চগড় (১১৪), সাতক্ষীরা (১১০), এবং কুড়িগ্রাম (৯১) সীমান্তে। বিজিবির তথ্যমতে, পুশইন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৮ জনকে কোস্টগার্ড ও ২৯ জনকে পুলিশ আটক করেছে।
গত শুক্রবারও পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৫ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। এর আগেও ঠাকুরগাঁও, খাগড়াছড়ি, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অসংখ্য মানুষকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। অনেকেই বলছেন, এরা দীর্ঘদিন ভারতে বসবাস করছিলেন এবং তাদের হঠাৎ করে ঠেলে পাঠানো অমানবিক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কনস্যুলার সংলাপের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানে আলোচনা চলছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে পুশইন ঠেকানো সম্ভব নয় বলে জানানো হয়।
ভারত কর্তৃক পুশইন কার্যক্রম শুধু মানবিক নয়, কূটনৈতিক দিক থেকেও গুরুতর উদ্বেগের কারণ। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, কোনো দেশের নাগরিককে ফেরত পাঠাতে হলে উপযুক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। আইন ও কূটনৈতিক দিক উপেক্ষা করে এই অব্যাহত পুশইন দুই দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশ সরকারের উচিত এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলের নজর কাড়তে জোরালো কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: